নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণ
ট্রান্সফর্মার থেকে দরজা উধাও, পর্যটনকেন্দ্র বন্ধই
ক্রেশ্বরের ধাঁচে উষ্ণ প্রস্রবণকে ঘিরে পর্যটক টানায় উদ্যোগী হয়েছিল বর্ধমান জেলা পরিষদ। বছর দশেক আগে বারাবনির পানিফলায় সেই উদ্দেশে গড়া হয়েছিল পার্ক, জলাধার থেকে কৃত্রিম পাহাড়। সে সব এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত। বারাবনির বিডিও জুলফিকর হাসান অবশ্য জানান, পর্যটন কেন্দ্রটির হাল ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আসানসোল বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে পানিফলায় প্রস্রবণটি ২০০০ সালে নজরে আসে প্রশাসনের। জেলা পরিষদের উদ্যোগে নির্মিত নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণটি উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী দীনেশ ডাকুয়া। উষ্ণ প্রস্রবণের জল ধরে স্নান করার জন্য চৌবাচ্চা তৈরি হয়। শিশুদের জন্য পার্ক, জলাধারে নৌকাবিহারের ব্যবস্থাও হয়। প্রস্রবণ ঘেরা পাঁচিলের মাঝে কৃত্রিম পাহাড়, এমনকী ভাড়া দেওয়ার জন্য ডর্মিটরি। চুক্তিতে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা এই সবের দেখভাল করত।
বছর তিনেক আগে সেই ঠিকাদার সংস্থা চলে গিয়েছে। বর্তমানে সব কিছু ভেঙেচুরে একাকার। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “১৯ জনের দান করা জমি ও কিছু খাস জমিতে গড়ে উঠেছিল ওই পর্যটন কেন্দ্রটি। সেটিকে ঘিরে এলাকার অর্থনীতি পাল্টে যাবে, আশা করেছিলেন স্থানীয় মানুষজন। চালু হওয়ার পরে তার প্রভাব খানিকটা পড়েওছিল। কিন্তু এখন সব কিছু যেন শ্মশানের চেহারা নিয়েছে।”
নিজস্ব চিত্র।
নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, সদর দরজায় লোহার অংশ খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। উধাও বড় করে পর্যটন কেন্দ্রের নাম লেখা ফলকটিও। টিকিট কাউন্টারের সব জিনিসপত্রও খোওয়া গিয়েছে। তবে আশপাশে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তিন টাকা প্রবেশমূল্য লেখা টিকিট। উষ্ণ প্রস্রবণের জলে সাঁতার কাটছিলেন শেখ সহিদুল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, তাঁর বাবা মোতিন মণ্ডল এখানে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। সহিদুল বলেন, “এখনও অনেকে প্রস্রবণের জল নিয়ে যান।” এখন সব জিনিসপত্র চুরি গিয়েছে বলে জানান তিনি। ট্রান্সফর্মারের ঘর রয়েছে। তবে তা থেকে সব যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
এলাকার বাসিন্দা যদুনাথ রায় জানান, এই পর্যটন কেন্দ্র গড়তে তিনি এক একর জমি দিয়েছিলেন। এই প্রস্রবণ দেখতে বাইরে থেকে লোকজন আসবেন, এলাকা জমজমাট হবে, এই সব আশাতেই তাঁরা ১৯ জন জমি দান করেছিলেন বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “প্রশাসন আবার নজর ফেরালে পর্যটন কেন্দ্রটির পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে। এ ব্যাপারে উদ্যোগ হলে এলাকার মানুষ কৃতজ্ঞ থাকবেন।”
পর্যটন কেন্দ্রটির হাল ফেরানোর ব্যাপারে নজর দিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছে যুব তৃণমূল। সংগঠনের তরফে জানানো হয়, পর্যটন কেন্দ্রের বাইরে সাইকেল, মোটরবাইক ইত্যাদি রাখার স্ট্যান্ড চালিয়ে এলাকার কয়েক জনের কর্মসংস্থান হয়েছিল। শীতের শুরু থেকে চড়ুইভাতির জন্য লোকজনের আনাগোনা বাড়ত। সে জন্য মিনিবাস, গাড়ি ইত্যাদি চলাচল করত। সে সবও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি যুব তৃণমূলের।
বিডিও জুলফিকর হাসান জানান, ওই পর্যটন কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে বহন করা সম্ভব ছিল না। তাই এমন পরিস্থিতি হয়েছে। চলতি আর্থিক বর্ষে সাংসদ তহবিল, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন এবং বিইইউপি প্রকল্পের টাকায় কেন্দ্রটির উন্নয়মূলক কাজ করা হবে বলে আশ্বাস বিডিও-র। এর জন্য আনুমানিক ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.