কুয়াশার জেরে শনিবার ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে পাঁচটি পথ দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ জন। শনিবার ভোররাত থেকে ঘন কুয়াশা ছিল দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। আকাশ ছিল মেঘলা। অনেক বেলা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।
শনিবার ভোররাতে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার চাঁদের মোড়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে শিলিগুড়িগামী বাসের সঙ্গে লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে দুই বাসযাত্রীর। আহত হয়েছেন আরও ২ জন। মৃতদের নাম চৈতালি চট্টোপাধ্যায় (৪৬) ও রাজীবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (৩৮)। চৈতালিদেবীর বাড়ি হুগলির শ্রীরামপুরের সতীশচন্দ্র ঘোষ লেনে। রাজীবেন্দ্রনাথবাবুর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার তপসিয়ায়। পুলিশ জানায়, এ দিন ঘন কুয়াশার জন্য রাস্তায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। ভোরে কুয়াশা আরও বাড়ে। বিপরীত দিক দিয়ে আসা লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে বাসটির।
শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ নবগ্রাম থানার আমার গ্রামের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লরির সঙ্গে একটি পিকনিক দলের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান গোপাল চট্টোপাধ্যায় নামে এক ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ। মৃতের বাড়ি বহরমপুর শহরের গোরাবাজার এলাকায়। ওই ঘটনায় আরও ১৫ জন জখম হন। |
নবগ্রামে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। ছবি: গৌতম প্রামাণিক। |
তাঁদের বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদেরও বাড়ি বহরমপুর শহরে। মিরিকের কাছে দুধিয়া এলাকায় পিকনিক সেরে তাঁরা একটি রিজার্ভ বাসে চেপে বহরমপুর ফিরছিলেন।
কুয়াশার কারণে শনিবার ভোরে সুতির কানুপুর বহুতালি রাজ্য সড়কে একটি ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে পড়ে। ট্রাক্টরের তলায় চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ট্রাক্টরের মালিক আশরাফুল শেখের(৪৩)। তাঁর বাড়ি সুতির মদনা গ্রামে। আহত হন চালক।
একটা ছোট লরিতে দুই মহিলা-সহ প্রায় ষাট জন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার সরস্বতীপুর থেকে যাচ্ছিলেন গড়বেতার দিকে। ঘন কুয়াশার মধ্যে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে শালবনির ভাদুতলার কাছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। শনিবার ভোরের এই দুর্ঘটনায় মারা যান লরির চালক রাজা মিশ্র (২২) এবং সুখলাল মুর্মু (৩৮) নামে এক যাত্রী। আহত অবস্থায় ৮ জনকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সরস্বতীপুর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন সামাজিক একটি প্রথা পালনের জন্য খুব ঠান্ডার মধ্যেই ভোরবেলা রওনা হয়েছিলেন গড়বেতার দিকে।
আরামবাগে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল সাইকেল আরোহী এক প্রৌঢ়ের। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে আরামবাগের চারমাইল এলাকায়। মৃতের নাম তারাপদ বেতাল (৫৮)। বাড়ি স্থানীয় রামনগর গ্রামে। পুলিশ জানায়, পেশায় কৃষক তারাপদবাবু চারমাইলে হাটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে আরামবাগ-বন্দর রোড ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। হাট থেকে বেরনোর মুখেই পিছন থেকে লরির ধাক্কায় তিনি গুরুতর জখম হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই তিনি মারা যান। পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠায়। লরিটি আটক করেছে পুলিশ। চালক পলাতক। |