কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের ২৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাঙ্ক। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বিশ্বব্যাঙ্ক, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের আর্থিক বিষয়ক দফতর এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কেন্দ্র বছরখানেক আগেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতে নয়া সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি সেচে ঋণের অর্থ খরচ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে, বেশি উপকৃত হবেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও
মাঝারি চাষিরা।
পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ডই হল কৃষি। রাজ্যের জিডিপি-র ২০ শতাংশই আসে কৃষিজাত পণ্য থেকে। রাজ্যের ৫৫ শতাংশ কর্মসংস্থানই কৃষিনির্ভর। যদিও রাজ্যের কৃষির উৎপাদনক্ষেত্র বাড়ানোর সম্ভাবনা সে ভাবে নেই। তার প্রধান কারণ, পশ্চিমবঙ্গের ৯৩ শতাংশ জমির মালিকই ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষি। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পরিকাঠামোগত উন্নয়নই একমাত্র পথ। সেই কারণেই সেচের উপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে চুক্তিতে। ঋণের অর্থে পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ১৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের উন্নয়ন হবে। তাতে উপকৃত হবেন প্রায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার চাষির পরিবার। আর্থিক সঙ্কটে ঘিরে থাকা পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই একশো দিনের কাজের অর্থ খরচে সেচ দফতরকে রূপায়ণ সংস্থা হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অবস্থায় বিশ্বব্যাঙ্কের এই ঋণ কৃষির উন্নয়নে আরও সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক বিষয়ক দফতরের যুগ্মসচিব বেণু রাজামণি সম্প্রতি বলেন, “দেশের উন্নত রাজ্যগুলির নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে কৃষির উৎপাদনশীলতা যথেষ্ঠ কম। সেই কারণে রাজ্যের জলসম্পদকে সর্বাধিক ব্যবহার করে সরকার পশ্চিমবঙ্গের কৃষির বৃদ্ধি বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। এতে পশ্চিমবঙ্গে বছরভর কৃষিনির্ভর কর্মসংস্থানও বাড়বে।”
এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে বেণু রাজামণি ছাড়াও সই করেন পশ্চিমবঙ্গের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের সচিব সুব্রত বিশ্বাস এবং বিশ্বব্যাঙ্কের কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্তো জাঘা। পরে জাঘা বলেন, “বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে কৃষির উৎপাদন বাড়াতে সেচের উন্নয়ন একান্ত প্রয়োজন। এতে কৃষি পণ্যের উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমনই পোক্ত হবে গ্রামীণ অর্থনীতিও।” |