দাবি এক। দাবি নিয়ে আন্দোলনের দিনও এক। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে ‘সংঘাত’ বেধেছে বামেদের।
কৃষকদের ধান-পাটের ন্যায্য দাম দিতে হবে, এই দাবিতে আগামী ৪ জানুয়ারি, বুধবার গ্রাম বাংলায় এক দিনের বন্ধ ডেকে রাজ্য সরকারের উপর ‘চাপ’ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছে চার বাম দলের কৃষক সংগঠন। ঘটনাচক্রে, একই দাবিতে ওই দিনেই গ্রাম বাংলার চাষিদের নিয়ে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে এক দিনের গণ-অবস্থানের ডাক দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসও। বেলা ১১ টা থেকে ওই দিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা চাষিদের
পাশাপাশি অবস্থানে সামিল হওয়ার কথা প্রদেশ নেতৃত্বের। মাসখানেক আগে কংগ্রেসের ডাকা ওই কর্মসূচির দিনেই বন্ধ ডেকে বামেরা ‘স্বৈরাচার’ করছে বলে অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতারা।
শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “বিভিন্ন জেলার গ্রাম থেকে ওই দিন কৃষকরা কলকাতায় এসে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন। আর বেছে বেছে ওই দিনই বামেরা গ্রাম বাংলায় বন্ধ ডাকল! চাষিরা তা হলে গ্রাম-গঞ্জ থেকে কলকাতায় আসবেন কী ভাবে? কংগ্রেসের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনে বাধা সৃষ্টির করে বামেরা স্বৈরাচার করছে।” নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত সাত মাসে কৃষক-স্বার্থে তেমন কোনও বড় আন্দোলনে নামতে দেখা যায়নি বামেদের। কিন্তু ধান-পাটের ন্যায্য সহায়ক মূল্যের দাবিতে নাগাড়ে শরিক শাসক দলকে ‘চাপ’ দিতে ব্লকে ব্লকে এবং জেলাশাসকের দফতরেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। এ বার চাষিদের নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভের দিনে বামেরা বন্ধ ডাকায় তাই মান্নানের কটাক্ষ, “বামেরা চাষিদের স্বার্থ দেখছে, না দলের স্বার্থ দেখছে? এই বন্ধের ডাক অনৈতিক।”
আগে বামজোটে থাকলেও এ বার ওই গ্রামবাংলা বন্ধ সমর্থন করছে না ‘ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি’। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্য, এ দিন খাদ্য দফতরে এক বৈঠকে সমিতি এ কথা স্পষ্ট জানিয়েছে তাঁকে। সমিতির সম্পাদক প্রশান্ত নাহা বৈঠকের পর বলেন, “সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযানকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। করব। এ কথাই মন্ত্রীকে জানিয়ে গেলাম। ধান-চাল সংগ্রহ করে আমাদেরও পেট চলে। তাই কোনও দলের বন্ধ-টন্ধে আমরা নেই।” ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি ছাড়াও খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের বৈঠকে ছিল রাজ্য চালকল মালিকদের সংগঠনও। তার সভাপতি দেবু মণ্ডল বলেন, “এখন পরিস্থিতি একটু জটিল হয়ে উঠেছে। তাই ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির সহযোগিতার আশ্বাস কাজে লাগবে।” চাল কেনার ব্যাপারে রাজ্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামী মঙ্গলবার এই দুই ব্যবসায়ী সমিতি এবং এফসিআইকে নিয়ে বৈঠক হবে। কারণ, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়েও আমরা চাল কেনাব।” আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। |