কেক, ক্রিসমাস ট্রি, ভুরিভোজ। পার্ক স্ট্রিটের রাজপথে মানুষের ঢল। ঝলমলে আলো।
রবিবার বড়দিনের আনন্দে ভাসতে যখন হাত-পা ছড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কলকাতা, তখন কোচি থেকে ছুটে আসছেন এক নাইজিরিয়ান। পার্ক স্ট্রিটের গিজগিজে ভিড়ে গা ভাসাতে নয়। অনাথ, অসহায় শিশুদের জন্য সান্টা ক্লজ হয়ে। চিরাগ কেরলকে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল যখন গোয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সালগাওকর ম্যাচ খেলতে রওনা হচ্ছে, তখন ব্যাগপত্তর গুছিয়ে কলকাতা রওনা দিলেন পেন ওরজি। উপহারের ঝুলি নিয়ে।
ট্রেভর মর্গ্যানকে আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, যা-ই ঘটুক না কেন, বড়দিনে কলকাতার গির্জাতেই কাটাবেন তিনি। শনিবার গভীর রাতে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ফোনে পেন বললেন, “আমি এ দিন রাতেই কলকাতা ফিরছি। এখানকার বাচ্চাদের সঙ্গে ক্রিসমাস সেলিব্রেট করতে আমার খুব ভাল লাগে। ওদের জন্য উপহারও নিয়ে যাচ্ছি। রবিবার সারা রাত আমি গির্জাতে কাটাব।” সোমবার বিশ্রাম নিয়ে মঙ্গলবার গোয়ায় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন পেন। ২৯ ডিসেম্বর সালগাওকর ম্যাচের জন্য।
অনাথ বাচ্চাদের জন্য সান্টা ক্লজ পেন। কিন্তু বড়দিনে যীশুর কাছে তিনি কী চাইবেন? পেন বললেন, “গত বার অল্পের জন্য আই লিগ জিততে পারিনি আমরা। এ বার কিন্তু জিতবই। আমরা মানসিক ভাবেও তৈরি। যীশুর কাছেও সেই প্রার্থনাই করব।”
টোলগে ওজবে, উগা ওপারা, মেহতাব হোসেন ইস্টবেঙ্গলে তারকার অভাব নেই। সেখানে পেন হলেন লাল-হলুদের বিপদের দিনের কাণ্ডারি। মাঝমাঠে আসল খেলাটা তিনি-ই তৈরি করেন। দরকারে গোলও করেন। পেনের নিজের দাবি, “ইস্টবেঙ্গলের শক্তি হল একতা। কোচ মর্গ্যানও কোনও পার্থক্য করেন না। সবাইকে সমান গুরুত্ব দেন। ‘আমি’ বলে ইস্টবেঙ্গলে কিছু নেই। ‘আমরা’-ই আসল শক্তি।”
ডেম্পোর পর চিরাগ ম্যাচেও ইস্টবেঙ্গলকে জয়ের দিশা দেখিয়েছেন পেন। এ বার মিশন সালগাওকর। যাদের কাছে মরসুমের প্রথম ট্রফি (ফেডারেশন কাপ) হাতছাড়া হয়েছে। গোয়ায় কী হবে? “জিতব আবার কী? আগের বার গোয়ার মাঠে আই লিগ হারিয়েছিলাম। এ বার ওদেরকে হারিয়েই কলকাতায় ফিরব আমরা। আমরা এখন দুর্দান্ত ফর্মে খেলছি। দু’গোলে জেতা উচিত আমাদের।”
আট বছর ধরে জাতীয় লিগের আশায় হাপিত্যেশ করে বসে আছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমী জনতা। এখন দেখার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে লিগ জিতে গোটা বাংলা ফুটবলের সান্টা ক্লজ হতে পারেন কি না পেন ওরজি! |