দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে নাগাল্যান্ডে ম্লান বড়দিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
খ্রিস্টানপ্রধান রাজ্য নাগাল্যান্ডে বড়দিনের উৎসবের আনন্দ উধাও নাগা দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। এনএসসিএন-এর খাপলাং ও খুলে-কিতোভি গোষ্ঠীর মধ্যে গুলির লড়াইয়ে কাল মৃত্যু হয়েছে এক খাপলাং জঙ্গির। গত তিন দিনে সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২। জখম অন্তত তিনজন।
নাগা মৈত্রীর জন্য গঠিত ‘ফোরাম ফর নাগা রিকনসিলিয়েশন’, নাগা মানবাধিকার সংগঠন ও গির্জাগুলি অন্তত বড়দিনের সময় দু’ তরফকে ক্ষান্ত থাকতে বললেও সে কথা কানেই তুলছে না জঙ্গিরা। জুনেবটো থেকে ডিমাপুরসর্বত্রই এখন জারি রাইফেলের শাসন। প্রভু যিশুর প্রেম ও ক্ষমার বাণী এ মুহূর্তে নাগাল্যান্ডে চাপা পড়ে যাচ্ছে অস্ত্রের ঝনাৎকার ও বারুদের গন্ধে। সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, এ বারের বড়দিনটা ঘরের মধ্যেই কাটাতে হতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। জুলাইয়ে খাপলাং বাহিনী ভেঙে দু’ভাগ হওয়ার পরে প্রথমবার খাপলাং গোষ্ঠী ১৭টি গাড়ির কনভয় নিয়ে ডিমাপুরে তাদের দফতর খুলতে এসেছিল। কারণ দল ভাঙার পরে নাগাল্যান্ডের বাণিজ্য রাজধানী ডিমাপুরের দখল খুলে-কিতোভির হাতেই রয়েছে। খাপলাং বাহিনী ডিমাপুরের ফের ঘাঁটি গাড়তে এলে দুই তরফে লড়াই বাধে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ডিমাপুরের নাহারবাড়ি ও পদুমপুখুরি এলাকা। সে দিন কেউ হতাহত হয়নি। সাময়িকভাবে পিছু হঠে খাপলাংরা। এলাকা জুড়ে পুলিশ ও আধ-সেনা মোতায়েন করা হয়।
এর পর, গত বৃহস্পতিবার অন্তত ৫০ জন খাপলাং জঙ্গি জুনেবটোতে গিয়ে হামলা চালিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী খুলে-কিতোভি গোষ্ঠীর ঘুকিয়ে শিবিরের দখল নেয় । খুলে-কিতোভির এক জঙ্গি মারা যায়, জখম হয় ৩ জন। খাপলাং বাহিনী ওই শিবির থেকে প্রচুর অস্ত্র ও গুলিও লুঠ করে। বদলা নিতে কাল রাতে জুনেবটোর আলাহুটো কলোনিতে খাপলাং বাহিনীর এক নেতা ভিকুঘাকে গুলি করে মারা হয়েছে।
পুলিশ, আধা-সেনা এবং সেনাবাহিনীর জওয়ানরা এখন জুনেবটোয় টহল দিচ্ছে। দল বেঁধে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে সশস্ত্র জঙ্গিদেরও। বড়দিনের উৎসবের আমেজটাই উধাও। গুখিয়ের প্রতিশোধ নিতে খুলে-কিতোভিরা সুরুহতোতে খাপলাংদের সরকার স্বীকৃত শিবিরে হানা দিতে পারে এমন আশঙ্কাও আছে।
ওই শিবিরে আছে শ’দুয়েক জঙ্গি। হামলা রুখতে অস্ত্র হাতে তৈরি খাপলাং জঙ্গিরাও। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। বড়দিনে ডিমাপুর ও কোহিমাতেও রক্ত ঝরার আশঙ্কায় দুই শহরের প্রশাসন ও পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। |