দিল্লি থেকে এসে তিনি কলকাতায় নামেন সকাল পৌনে ৯টায়। কলকাতা থেকে ডিমাপুরের উড়ান ছাড়ার কথা সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। ফলে নিশ্চিন্ত মনে কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ডিমাপুরের উড়ান ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তখনই বিমান সংস্থার অফিসার এসে জানিয়ে দেন, ডিমাপুরের বিমান তো সকাল ৭টাতেই উড়ে গিয়েছে!
বুধবার সকালে কলকাতায় এই ঘটনার পরে হুলস্থুল বাধিয়ে দেন সেনাবাহিনীর কর্নেল কে এস কার্ডিয়ান। তিনি একা নন, দিল্লি থেকে জেট এয়ারওয়েজের উড়ানে কলকাতায় এসে তাঁর মতো ১৩ জন যাত্রীর একই হাল হয়। সকলেই দিল্লি থেকে কলকাতা ঘুরে জেট সংস্থার উড়ানে ডিমাপুর যাচ্ছিলেন। কার্ডিয়ানের কথায়, “সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে দিল্লি থেকে উড়েছি। তার আগে আমার মালপত্র সরাসরি ‘বুক’ করে দিয়েছি ডিমাপুরের জন্য। টিকিটেও লেখা রয়েছে, কলকাতা থেকে ডিমাপুরের উড়ান ছাড়বে ১০টা ১০ মিনিটে। এমনকী দিল্লিতেই কলকাতা-ডিমাপুর উড়ানের বোর্ডিং কার্ডও দিয়ে দিয়েছে। তার পরেও আমাদের ফেলে রেখে বিমান উড়ে যেতে পারে কী ভাবে?”
জেট সংস্থার এক কর্তার কথায়, “গত সোমবার থেকেই কলকাতা-ডিমাপুর রুটের উড়ানের সময় এগিয়ে আনা হয়েছে। এটা জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল যাত্রীদের। কিন্তু এ দিন দিল্লি থেকে আসা ওই যাত্রীদের কাছে কোনও কারণে সেই বার্তা পৌঁছয়নি। তাই এই বিপত্তি।” তাঁরা যে ওই রুটে উড়ানের সময় এগিয়ে আনার কথা যাত্রীদের জানিয়েছিলেন, তার সমর্থনে ওই জেট-কর্তা বলেন, “আমরা যদি কারও কাছেই খবর না-পাঠাতাম, তা হলে তো বাকি যাত্রীদেরও একই হাল হত! তা তো হয়নি।”
উড়ানের সময়-বিভ্রাটে নাজেহাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের দুর্ব্যবহারেরও শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কর্নেল কার্ডিয়ান। তিনি জানান, ঘটনার অব্যবহিত পরেই অন্য উড়ানে তাঁদের ডিমাপুর পৌঁছে দেওয়ার দাবি তোলায় বিমান সংস্থার অফিসারেরা দুর্ব্যবহার করেন। বলা হয়, ২৫ ডিসেম্বরের আগে বিমানে জায়গা হবে না। কার্ডিয়ান বলেন, “আমি বন্ধুদের সঙ্গে বড়দিনের ছুটি কাটাতেই ডিমাপুর যাচ্ছিলাম। অনেকেই ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। ফলে ২৫ তারিখে পৌঁছলে উৎসবের আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে। তা ছাড়া তত দিন পর্যন্ত আমরা গাঁটের কড়ি খরচ করে কলকাতায় বসে থাকব কেন?”
এই নিয়ে সকাল থেকে বিমান সংস্থার সঙ্গে ব্যাপক গণ্ডগোল চলে ওই যাত্রীদের। জেটের পাল্টা অভিযোগ, ওই যাত্রীদের সাহায্য করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরাই দুর্ব্যবহার করেন। শেষে বিমান সংস্থার তরফেই যাত্রীদের হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালের উড়ানেই তাঁরা যাতে ডিমাপুর যেতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করেছে বিমান সংস্থা।
আটকে ১৯৩ বিদেশি: ঢাকার আবহাওয়া খারাপ থাকায় মঙ্গলবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমান ফিরে আসে কলকাতায়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা কলকাতায় আটকে থাকেন ১৯৩ জন বিদেশি। ভারতে ঢোকার জন্য বৈধ ছাড়পত্র ছিল না তাঁদের। তবে শীতের রাতে বিমানে বা লাউঞ্জে বসে থাকতে হয় তাঁদের। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার কোনও লক্ষণ না-দেখে বিমান সংস্থা যাত্রীদের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি চায় অভিবাসন দফতরের কাছে। অভিবাসন দফতরের ডিসি শাকিল আহমেদ বলেন, “এই ঠান্ডার মধ্যে সারা রাত বিমানে অথবা বিমানবন্দরে বসে থাকা কষ্টকর। তাই তাঁদের হোটেলে পাঠানো হয়।” |