জেলার নদী ভাঙন সমস্যার সমাধানে উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নুরকে সামনে রেখে আন্দোলনে নামছে কংগ্রেস। জেলায় মহানন্দা ও ফুলহারের ভাঙন বিপজ্জনক আকার নিয়েছে। পূর্বতন বাম সরকারের আমলে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে ভাঙন সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের উপরে ভরসা নেই কংগ্রেসের। তাঁরা ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চায়। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার যাতে ‘নো অবজেকশন’ জানায় সেই দাবিতেও আগামী ২৬-২৯ ডিসেম্বর চার দিন ধরে ৭০ কিলোমিটার পদযাত্রায় নামার কথা ঘোষণা করেছেন ওই কংগ্রেস সাংসদ। জেলা কংগ্রেস সূত্রের খবর, পদযাত্রায় উত্তরবঙ্গের কংগ্রেস নেতৃত্ব ছাড়াও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে রাজ্য স্তরের একাধিক নেতা সামিল হবেন। সোমবার মালদহ স্টেশন রোডে নিজের দলীয় কার্যালয়ে বসে প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভানেত্রী তথা উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “ফুলহার ও মহানন্দা নদীর ভাঙনে উত্তর মালদহের রতুয়া-১ ও ২, চাঁচল-১ ও ২, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ও ২ নম্বর ব্লক বিপন্ন হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ৩৪ বছরে বাম সরকার ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান করেনি। ভাঙনের স্থায়ী সমাধান না হওয়ার কারণে জেলায় প্রায় মহানন্দা নদীর ৪০ কিলোমিটার ও ফুলহারের ১৩ কিলোমিটার বাঁধের পরিস্থিতি বেহাল হয়ে পড়েছে। বন্যায় গোটা উত্তর মালদহ বন্যায় ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকার বাঁধের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হোক। রাজ্য সরকার নো অবজেকশন দিয়ে ভাঙন রোধের কাজ কেন্দ্রীয় সরকারে হাতে তুলে দিক।” জেলা কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ ডিসেম্বর গনি খান চৌধুরির সমাধিস্থল থেকে পদযাত্রা শুরু হবে। ২৯ ডিসেম্বর পরানপুরে পদযাত্রা শেষ হবে। কলকাতায় পদযাত্রার পর এবার মালদহে স্থায়ী ভাঙন সমস্যার সমাধানে পদযাত্রার ব্যাপারে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “যুব কংগ্রেসিরা তৃণমূলের হাতে রাজ্য জুড়ে আক্রান্ত হচ্ছিল। তাঁর প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসিদের মনোবল চাঙা করতে পথে নেমেছিলাম। স্থায়ী ভাঙন সমস্যার সমাধানে ফের পথে নামতে বাধ্য হয়েছি। পদযাত্রার পরেও যদি ভাঙ্গন সমস্যার সমাধান না হয় তবে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু করব।” জেলায় ভাঙন রোধের কাজে প্রসাসনিক ঢিলেমিরও সমালোচনা করেন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভানেত্রী। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসনিক ঢিলেমির জন্যই দেবীপুর থেকে কাহালা পর্যন্ত ২ কিলোমিটার কাজ আটকে রয়েছে। তিনি বলেন, “ওই বাঁধের জন্য নাবার্ড থেকে এক বছর আগে ৭ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা নিয়ে আসা হয়। তার পরেও জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণ করতে না পারায় এখনও সেখানে কাজ শুরু হয়নি। বাঁধের জন্য যাদের জমি দরকার এর আগে তাঁরা জমি দিয়েও টাকা পাননি। এ বার বাসিন্দারা জমি দিতে চাইছেন না।” তাঁর দাবি, এই ব্যাপারে তিনি বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পরে সমস্যা মিটেছে। বাসিন্দারা জমি দিতে রাজি হয়েছেন। তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসনের ঢিলেমির জন্য টাকা থাকা সত্ত্বেও বাঁধের কাজ শুরু করা যায়নি। শুখা মরসুমে কাজ শুরু করতে হবে।” |