রোগীরা নিজ দায়িত্বে হাসপাতাল থেকে ওষুধ সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু সেই ওষুধে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে বা রোগ ভাল না হলে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও দায় নেই। অন্য কেউ নয়, এই বিজ্ঞাপন খোদ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেওয়া ঝুলছে স্বাস্থ্যকর্মীদের লাগানো বিজ্ঞাপন।
তাতে উল্লেখ রয়েছে, চিকিৎসকের পদগুলি খালি থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। অথচ ঘাটবেড়া-কেরোয়া পঞ্চায়েত এলাকার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এই কেরোয়া প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্র। এলাকার বাসিন্দা সুফল মণ্ডলদের ক্ষোভ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কথা কী আর বলব! এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র তো নিয়মিত খোলে না। এক জন ফার্মাসিস্ট এবং এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী আছেন। এই দু’জনকে দিয়েই কোনওরকমে হাসপাতাল চলছে।” বাসিন্দারা জানান, তার উপর আবার দীর্ঘদিন হল ওই নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই অবস্থায় আপদে-বিপদে ভরসা বলতে হাতুড়ে চিকিৎসক। |
আরও এক চিকিৎসক যোগ দেবেন।” রোগী দেখছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী। ছবি: সুজিত মাহাতো। |
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৫ শয্যার। স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনগুলি তালা বন্ধ। কিন্তু কেন এমন অবস্থা? ফার্মাসিস্ট বরুণ দুয়ারি বলেন, “কী করব। চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক না থাকায় রোগীকে দেখে তাঁকে কী ওষুধ দেওয়া দরকার এক ফার্মাসিস্টের পক্ষে তা বিবেচনা সম্ভব নয়।”
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে কমবেশি ২০-২৫ হাজার মানুষ নির্ভর করেন। গোটা ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এবং লাগোয়া বেড়সা ও আড়শার চাটুহাঁসা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পান। বর্তমানে এখানে দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, এক জন ফার্মাসিস্ট ও এক জন সুইপার আছেন। কেরোয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় চাষি রামকুমার মণ্ডল তাঁর নাতনি পূর্ণিমাকে নিয়ে এসেছেন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তিনি বলেন, “শীত পড়েছে। নাতনির গলা ফুলেছে। উপসর্গ শুনে ওষুধ দিলেন নিবারণ কুমার। এখানে চিকিৎসক না থাকলেও আসতে হয়েছে। কারণ, বলরামপুর সদরের হাসপাতাল অনেক দূর। এখানে চিকিৎসক থাকলে ভাল হত।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন ঘাটবেড়ার বাসিন্দা লাল মণ্ডল। তাঁর চোখ ফুলেছে। লাল মণ্ডলের কথায়, “চিকিৎসক নেই। তাই এখানে দেখানো হল না। তবে একটা ওষুধ দিয়েছে। ডাক্তার দেখাতে বলল আমাকে।”
ফার্মাসিস্ট বরুণ দুয়ারি বলেন, “দিন কয়েক আগে এক জন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এসেছেন। এক জন চিকিৎসককে এখানে পাঠানো হচ্ছে বলে শুনেছি। চিকিৎসক যোগ দিলেই বহির্বিভাগ বন্ধের বিজ্ঞপ্তিও তুলে দেওয়া হবে।” বিএমওএইচ বলেন, “দিন কয়েক আগে সেখানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন। |