সত্যজিৎ খুনে ধৃত দশম শ্রেণির ছাত্র
কাদশ শ্রেণির ছাত্র সত্যজিৎ মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত ছাত্র মহম্মদ একলাখ খানের বাড়িও রঘুনাথপুর শহরের মিশন রোড এলাকায়। বছর আঠারোর একলাখ রঘুনাথপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ে। আগামী বছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। রবিবার রাতেই তাকে ধরার পরে সোমবার রঘুনাথপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, ত্রিকোণ প্রেমকে ঘিরে বিবাদের জেরেই খুন হতে হয়েছে রঘুনাথপুর শহরের বাঁকুড়া রোড লাগোয়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সত্যজিৎকে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সে নিখোঁজ ছিল। শনিবার রাতে মৌতোড় জলাধারের সেচনালা থেকে উদ্ধার হয় সত্যজিতের দেহ। নাইলন জাতীয় দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে মারা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছিল। খুনের কারণ সম্পর্কে প্রথম দিকে ধন্দে ছিল পুলিশ। তবে সত্যজিতের পরিবারের দেওয়া তথ্য ও স্থানীয় সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করার পরে খুনের কারণ হিসাবে ‘প্রণয় ঘটিত’ বিবাদ সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই শনিবার রাতে জেরা করা হয় সত্যজিতের একাধিক বন্ধু-বান্ধবীকে। পুলিশ সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর শহরেরই বাসিন্দা, একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে জেরা করার পরেই মহম্মদ একলাখের নাম উঠে আসে। তার পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে আগে সম্পর্ক ছিল একলাখের। পরে সত্যজিতের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়ে ছাত্রীটির। তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত একলাখ ও সত্যজিতের মধ্যে। শুক্রবার বিকেলে সত্যজিতের সঙ্গে তার বচসাও হয়েছিল বলে একলাখ পুলিশের কাছে জেরায় স্বীকার করেছে।” তবে একই শহরে থাকার সুবাদে তাদের দু’জনের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব’ ছিল বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে।
ছাত্র খুনের তিন দিন পরে তদন্তের অগ্রগতি বলতে এইটুকুই। কে বা কারা সত্যজিৎকে খুন করেছে, সে সম্পর্কে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য এখনও তারা পায়নি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে। এমনকী এখনও উদ্ধার হয়নি সত্যজিতের মোটরবাইকটি। বস্তুত সত্যজিৎকে কয়েক জন মিলে খুন করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হলেও তারা কারা, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই পুলিশের কাছে।
অন্য দিকে, ধৃত একলাখের পরিবারের অভিযোগ, ‘মিথ্যা অভিযোগে’ তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে তার পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে ক্ষোভও জানানো হয়েছে। একলাখ রঘুনাথপুরে থাকে তার মামাবাড়িতে। মামা শেখ আলি এ দিন দাবি করেন, “শুক্রবার ও শনিবার রাতে একলাখ আমার সঙ্গেই ছিল। তা হলে ও কী ভাবে খুনের ঘটনায় জড়িত হল?”
এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। তবে রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেছেন, “ছাত্র খুনের তদন্তে নেমে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য ও সূত্রের ভিত্তিতেই মহম্মদ একলাখ নামের ওই ছাত্রটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ওকে জেরা করলে খুনের ঘটনায় আরও তথ্য মিলবে বলে আমাদের ধারণা।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও তথ্য পেতে সত্যজিতের পাশাপাশি একলাখ এবং একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মোবাইলের ‘কললিস্ট’ বিশদে খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশি তদন্তে আস্থা রেখেছে নিহত ছাত্রের পরিবার। সত্যজিতের মামা সুকুমার মণ্ডল বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে আমাদের কাছে যা যা তথ্য রয়েছে, সে সবই পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখছে। তবে আমরা চাই, খুনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত ধরুক পুলিশ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.