জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের পুনর্বাসনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ৪০ বছরের নিমাই সামন্ত। কিন্তু খুনের মামলায় জেল খাটা এক জনের সঙ্গে কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে চাইছিলেন না। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল একাধিক পাত্রীপক্ষ। শেষে সশ্রম কারাবাসে উপার্জিত পুরো টাকা পাত্রীর নামে স্থায়ী আমানত করে বিয়ের পিড়িতে বসেন নিমাই।
খুনের মামলায় জেলে ছিলেন নদা নায়েক। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে বিবাহযোগ্য দু’মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না তিনি। এমন বাবার মেয়ের সঙ্গে কেউ বিয়েতে রাজি হচ্ছেন না। এ ভাবেই অনেক বার বিয়ে ভেঙেছিল যোগেন্দ্র মুখীর মেয়েরও। পরে অবশ্য এক সহৃদয় ব্যক্তি বিয়ে করতে রাজি হন। ষাটোর্ধ্ব যোগেন্দ্রবাবুর অবশ্য এখন সংসার চলে না।
কারামুক্তদের নানা সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে মেদিনীপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। লক্ষ্য, জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। তাঁদের স্বনির্ভর করে তোলা। সমাজের চোখেও যাতে তাঁরা সম্মান পান, সে জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচিও নেবে ওই সংস্থা। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাড়ি ফিরে অনেকের অনেক রকম সমস্যা হয়। সেই সমস্যা সমাধানের জন্যই উদ্যোগী হয়েছে সংস্থাটি। আমরাও প্রশাসনিক ভাবে যতটা সম্ভব সাহায্যের চেষ্টা করব।” মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের প্রোবেশন কাম আফটার কেয়ার অফিসার সুপ্রিয়া ভকতেরও (বন্দ্যোপাধ্যায়) বক্তব্য, “জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের সহজে সমাজ আপন করে নেয় না। হয়তো মুর্হূতের ক্রোধে কেউ খুন করেছিলেন। কিন্তু এক জন মানুষ তো আগাগোড়া বা জন্মাবধি অপরাধী নন। জীবনের ছন্দে ফেরার আকাঙ্ক্ষাও থাকে। সুযোগটা দরদার। সমাজের মানসিকতাতেও পরিবর্তন দরকার। জেলের বাইরে সেই কাজটা কেউ করলে তো ভালই হয়।” আর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সিস্টার অ্যালেক্স এ সি-র বক্তব্য, “কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের সামাজিক সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ওঁদের স্বনির্ভর করার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।”
গত এক বছরে জেল থেকে ছাড়া পাওয়া ৬ জনের সঙ্গে তাঁদের সমস্যা নিয়ে রবিবারই কথা বলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। সেই ৬ জনই খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে ছিলেন। ১৪-১৬ বা ১৮ বছর জেল খাটার পরে তাঁদের আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে কারা দফতর তাঁদের মুক্তি দিয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে নানা সমস্যায় জেরবার হতে হচ্ছিল তাঁদের। রবিবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁরাও খুশি। তাঁদের বক্তব্য, “আমাদের সবারই বয়স হয়েছে। আর তো বেশি পরিশ্রমের কাজও করতে পারব না। এই অবস্থায় হাতের কাজ শিখে যদি রোজগার করার সুযোগ পাই ভাল হয়। সমাজও যদি একটু সহানুভূতি দেখায়উপকৃত হব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.