|
|
|
|
প্রশিক্ষণ বাসিন্দাদেরও |
ঘিঞ্জি হাওড়ার পুরোটাই জতুগৃহ, মানছেন কর্তারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ছোট, মাঝারি, বড় কারখানার জঙ্গল তো দীর্ঘদিনের। তার সঙ্গে যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে শপিং মল, বহুতল। গোটা হাওড়া শহরই যে কার্যত ‘জতুগৃহ’, তা পরোক্ষে স্বীকার করে নিলেন হাওড়া পুরসভা, পুলিশ, দমকল ও প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, ঘিঞ্জি হাওড়া শহরে একের পর এক বহুতল, শপিং মল, হাসপাতাল, নার্সিংহোম, কারখানা গড়ে উঠলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির আগুন মোকাবিলার পরিকাঠামো নেই।
এই অবস্থায় কোথাও আগুন লাগলে তা ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে কর্তাদের আশঙ্কা। তাই শুধু প্রশাসন নয়, মানুষেরও সচেতন হওয়া জরুরি। হাওড়া দমকল দফতর সূত্রের খবর, আগুনের মোকাবিলায় দমকলের পক্ষ থেকে মানুষকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। জনতাকে সচেতন করতেই সোমবার একটি আলোচনাসভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন, হাওড়া সিটি পুলিশ এবং দমকল। শিবপুর পুলিশলাইনে ওই সভায় ছিলেন জেলার বিভিন্ন কারখানা, হাসপাতাল, নার্সিংহোম ও আবাসিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ছিলেন জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, মেয়র মমতা জয়সোয়াল, দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর (পশ্চিমাঞ্চল) বিভাস গুহ ও সিটি পুলিশের কর্তারা।
জেলাশাসক বলেন, “হাওড়া শিল্পাঞ্চলে অগ্নি-সুরক্ষা নিয়ে আমরা প্রতি মাসে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনায় বসি। কিন্তু গোটা হাওড়ায় অনেক বহুতলও আছে। সেখানে মাঝেমধ্যে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও অগ্নি-সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।” তিনি জানান, হাওড়ার যে-সব কারখানা, হাসপাতাল এবং বহুতলে অগ্নি-বিধি মানা হয় না, সেগুলির ক্ষেত্রে কী করা হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে নির্দেশিকা চাওয়া হয়েছে।
বিভাসবাবু বলেন, অনেক সময়েই আগুন লাগলে দমকলে খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে গাফিলতি থেকে যায়। ঘাটতি থেকে যায় প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও। ফলে দমকলকর্মীরা অনেক সময়েই বুঝতে পারেন না, কোথায় আগুন লেগেছে। তাই তাঁদের পৌঁছতে দেরি হয়। তিনি জানান, ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ‘সেন্ট্রাল এসি’ বা কেন্দ্রীয় বাতানুকূল ব্যবস্থা থাকলেও ‘ইমার্জেন্সি উইন্ডো’ বা আপৎকালীন জানলা ছিল না। তা থাকা অত্যন্ত জরুরি ছিল। প্রতিটি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রলি এবং র্যাম্প রাখার উপরেও জোর দেন তিনি। বিভাসবাবু জানান, প্রতিটি কারখানা, নার্সিংহোম ও বহুতলে আগুনের মোকাবিলায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী রাখতে হবে। আবাসন ও কারখানার ক্ষেত্রে দমকলের অনুমতি এবং ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ পাওয়া যাবে ডেপুটি ডিরেক্টর (পশ্চিমাঞ্চল)-এর হাওড়া ডিভিশন অফিস থেকে। তার জন্য দমকলের সদর দফতর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে যেতে হবে না।
মেয়র মমতাদেবী জানান, হাওড়ায় পরিকল্পনামাফিক কাজ হয়নি। প্রচুর কারখানা বন্ধ হয়ে সেই জায়গায় আবাসন হয়েছে। ফলে অগ্নি-সুরক্ষার বিষয়টি আগের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। তাতে দু’জন পুর-প্রতিনিধি ছাড়াও থাকছেন হাওড়া সিটি পুলিশ ও দমকলের প্রতিনিধি। ওই কমিটি বিভিন্ন জায়গায় অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে।” |
|
|
|
|
|