যান্ত্রিক বিভ্রাট
সাংসদদের চাপে বিব্রত রেল মন্ত্রক
ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেই শৈত্যপ্রবাহের কবলে গোটা উত্তর ভারত। তিন-চার দিন ধরে কুয়াশার পুরু চাদরে মোড়া দিল্লি-সহ উত্তর ভারত। বিপর্যস্ত ট্রেন-বিমান-সড়ক পরিবহণ। এরই মধ্যে নতুন ‘বায়নাক্কা’ ধরেছেন বিহারের সাংসদরা। প্রকৃতি বশে থাকুক বা না থাকুক, ট্রেন চালাতে হবে সময়ে। সাংসদদের এই দাবিতে এখন মাথায় হাত রেল কর্তাদের। এরই মধ্যে ‘ফগ সেফ্টি ডিভাইজ’ কাজ না করায় মন্ত্রকের সমস্যা আরও ঘোরতর।
সূর্যের দেখা নেই গত তিন। কনকনে ঠাণ্ডা। সঙ্গে উত্তরের ঝোড়ো হাওয়া। কুয়াশায় উধাও দৃশ্যমানতা। ফলে সাধারণ যাত্রিবাহী ট্রেনই হোক বা সুপারফাস্ট রাজধানীদিল্লিমুখী ট্রেনের গতি ঠোক্কর খাচ্ছে প্রতি পদে। মৌসম ভবন রেল মন্ত্রককে জানিয়েছে, আগামী দিন দশেক ঘন কুয়াশা থাকবে গোটা উত্তর ভারতে। ফলে মাথায় হাত রেল কর্তাদের। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, কুয়াশা কাটলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে অতিরিক্ত চার থেকে সাত দিন সময় লেগেই যায়। এক রেলকর্তার মন্তব্য, “কোথাও যেতে হলে নির্দিষ্ট দিনের পরিবর্তে তার আগের দিনের টিকিট কাটাটাই বাঞ্ছনীয়। এখনই এক-একটি ট্রেন গড়ে ১৩-১৪ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে। যত সময় যাবে তত দেরিও বাড়বে।”
এরই মধ্যে হাওড়া-দিল্লি রাজধানীতে বিহারের সাংসদরা প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে পটনা থেকে দিল্লি পৌঁছন। যাত্রীরা ক্ষুব্ধ তো বটেই। কিন্তু সাংসদরা কী করে এত দেরি মেনে নেন! তাঁদের প্রশ্ন, সংসদে গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন চলছে, তখন কেন দেরিতে চলবে ট্রেন? তাঁরা কেন সময়ে পৌঁছতে পারবেন না দিল্লি? হাজিরা খাতায় কেন সই করতে পারবেন না? এই সব প্রশ্ন নিয়ে কালই রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে দেখা করতে চান বিহারের বিভিন্ন দলের জনা কুড়ি সাংসদ। আজ সপ্তাহের শুরুতে সংসদে পৌঁছতে রবিবার পটনা থেকে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানীতে চড়েছিলেন জেডিইউ দলের মোনাজির হাসান, জামুইয়ের সাংসদ পুতুলদেবী, নালন্দার কৌশলেন্দ্র কুমার-সহ প্রায় ২২ জন সাংসদ। পটনাতে ট্রেন সময়ে পৌঁছলেও মোগলসরাইয়ের পর থেকে কুয়াশার কারণে ট্রেন দেরিতে চলতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সকাল দশটার বদলে ট্রেন দিল্লিতে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এসে পৌঁছয়। মোনাজির হাসান বলেন, “রাজধানী এক্সপ্রেসের মান পড়ে গিয়েছে। এত দেরি কেন করবে ওই ট্রেন? আমরা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব বলে ঠিক করেছি।” কানপুর থেকে দিল্লির মধ্যে কেন একাধিক ছোট স্টেশনে রাজধানী থেমেছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংসদেরা। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রকের যুক্তিকানপুর থেকে দিল্লির মধ্যে কুয়াশার প্রভাব সব থেকে বেশি। ফলে স্বভাবতই গাড়ি আস্তে চালাতে হয়। সাংসদদের বক্তব্য ছিল, রাজধানীর মতো গাড়িকে কেন অগ্রাধিকার দেওয়া হল না? রেল বলছে, আগের ট্রেনকে টপকে তো পিছনের ট্রেনকে আনা যায় না।
তবে মন্ত্রককে বিব্রত করছে ‘ফগ সেফ্টি ডিভাইজ’-এর ব্যর্থতা-ও। কুয়াশায় নির্বিঘ্নে ট্রেন চালাতে উত্তর ভারতের বেশ কিছু ট্রেনে এই যন্ত্র পরীক্ষামূলক ভাবে লাগিয়েছিল মন্ত্রক। মূলত সামনে সিগন্যাল থাকলে তা চালককে জানিয়ে দেয় ওই যন্ত্র। কিন্তু উত্তর রেল বলছে, পরীক্ষায় ফেল করছে ওই যন্ত্র। চালকেরা জানান, সিগন্যাল পার হয়ে যাওয়ার পর সতর্ক করছে ওই যন্ত্রটি। ফলে কুয়াশাপ্রবণ বহু এলাকাতেই সিগন্যালের সামনে পটকা ফাটিয়ে চালককে সতর্ক করে দেওয়ার পদ্ধতিতেই ভরসা রাখা হচ্ছে। তাই ট্রেনও চালাতে হচ্ছে দেরিতে। সব মিলিয়ে বেশ চাপেই দীনেশের মন্ত্রক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.