উল্টোডাঙা বস্তি
ঘরের চালে মদের বাক্স, ভিতরে চোলাইয়ের ঠেক
স্তির ঘরের চালে রাম আর বিয়ারের ফাঁকা বাক্স পড়ে। মদের বোতল বার করে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে ভাবলে ভুল করবেন। এ বাক্স আসলে হাতছানি। পথচলতি মানুষকে চোলাইয়ের ঠিকানার হদিস দেওয়া।
সোমবার দুপুর আড়াইটে। কলকাতা পুলিশের পঞ্চম ব্যাটালিয়নের সামনে উল্টোডাঙার মুরারিপুকুর রোডের পাশে প্রমোদ দাশগুপ্ত কলোনি। রাস্তার ধারে বস্তির ওই ঘরের সামনে পিঁড়ি পেতে বসে এক মহিলা। ভিতরে মিলছে চোলাই। ঠেকের এ হেন প্রচারের ফিকির ফাঁস করে দিলেন বস্তিরই এক যুবক।
কয়েক পা এগিয়ে বস্তিরই এক মুদির দোকান। আর এক স্থানীয় যুবক জানালেন, চোলাই মেলে ওই দোকানের পিছনেও। রেললাইনের ধারে বস্তির অন্য একটি ঘরে প্লাস্টিকের গ্লাসে সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত পাঁচ, দশ, কুড়ি টাকার চোলাই খেতে আসেন মানিকতলা, উল্টোডাঙা, বাগমারি এলাকার দিনমজুর, রিকশাচালক, অটোচালকেরা। সে খবরও দিলেন বস্তির লোকজনই।
উস্তি, সংগ্রামপুরের বিষমদ-কাণ্ডে এত জনের মৃত্যুর পরেও খাস কলকাতার ছবিটা পাল্টায়নি এতটুকুও। মানিকতলা থানা এলাকায় এখনও দিব্যি রমরম করে চলছে চোলাইয়ের কারবার। পুলিশ জানায়, রবিবার, শীতের রাতে আগুন পোহাচ্ছিলেন বস্তির কিছু লোক। অভিযোগ, তখনই চোলাই খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আগুনে লাথি মেরে বসেন কয়েক জন বাসিন্দা। পুড়ে যায় এক কিশোরী। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কয়েক জন জখমও হন। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, চোলাই বিক্রির প্রতিবাদ করায় ওই ঘটনা ঘটে। তাতে জড়িত সন্দেহে ওই রাতেই গোষ্ঠ সর্দার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হয়। আরও কয়েক জনের খোঁজ চলছে।
এলাকার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানিয়েছেন, চোলাইয়ের কারবারে কারা সামনের সারিতে রয়েছে। কিন্তু মানিকতলা থানার পুলিশ এখনও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ। পুলিশও স্বীকার করেছে, চোলাইয়ের কারবার একেবারে বন্ধ করা যায়নি। তবে তাদের দাবি, প্রকাশ্যে চোলাইয়ের ঠেক চলছে না। যা চলছে, সবই লুকিয়ে-চুরিয়ে।
লুকিয়ে-চুরিয়েই বা চলবে কেন চোলাই ঠেক? পুলিশের আশঙ্কা, বস্তি এলাকায় ওই সব ঠেক ভাঙতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাদের দাবি, মাসখানেক আগে এক চোলাই কারবারিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে নিগৃহীত হতে হয়। তা সত্ত্বেও সংগ্রামপুরের ঘটনার পরে মানিকতলা থানা এলাকার সাতটি বস্তিতেই নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, সেই টহল লোক দেখানো।
তা হলে কি বস্তির চোলাইয়ের ঠেকগুলি ভাঙা হবে না?
কলকাতা পুলিশের ইস্ট সাবার্বান ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, “কারা ঠেকগুলি চালাচ্ছে, পুলিশ তা জানতে পেরেছে। ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে কি রবিবার রাতে ওই ঘটনা না ঘটলে পুলিশ জানতেই পারত না কারা চোলাইয়ের ঠেক চালায়? পুলিশকর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.