যাদবপুর বিদ্যাপীঠে শিক্ষক-নিগ্রহের দু’দিন পরে, সোমবার তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত ও অনিতা কর মজুমদারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন কর্তৃপক্ষ। তবে এ দিনও ওই স্কুলে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতার সুরাহা হয়নি। স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পরেই তাঁরা এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
গত শনিবার ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির উত্তীর্ণ ১০০ জন ছাত্রকে সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান এক দল অভিভাবক। অভিযোগ, তখনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিগৃহীত করেন তৃণমূলের কিছু কর্মী এবং তাঁদের সঙ্গী বহিরাগতেরা। সোমবারেও ওই ঘটনার জের চলে স্কুল-চত্বরে। শিক্ষক-নিগ্রহের প্রতিবাদে এ দিন এক দল ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও প্রাক্তনী স্কুলের সামনে পথ অবরোধ করেন। |
শিক্ষক-নিগ্রহের প্রতিবাদে প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবকদের পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র |
স্কুলের গেটের সামনে সভা করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। পরে তাঁরা মিছিল করে থানায় গিয়ে স্মারকলিপিও দেন। তাতে ওই দুই কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। সুব্রত দাশগুপ্ত নামে স্কুলের এক প্রাক্তনী বলেন, “এই ধরনের ঘটনা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যাতে না-ঘটে, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে।”
শনিবার রাতে স্কুলে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে কারও নাম ছিল না। তা হলে এ দিন নতুন করে অভিযোগ দায়ের করার কারণ কী? প্রধান শিক্ষক রাজেন মণ্ডল বলেন, “পুলিশের কাছে ওই দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্কুলে ভাঙচুর ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধরে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।” ঘটনার দিনেই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়নি কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন এ দিন জানান, ওই স্কুলে ভর্তির বিষয়টি যাচাই করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে জেলার স্কুল পরিদর্শককে। সচিব বলেন, “যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ক্যাম্পাসেই কিশলয় বিদ্যালয় নামে যে-প্রাথমিক স্কুলটি রয়েছে, সেটি ‘প্রাইভেট’ বলে দাবি করা হলেও তা ঠিক নয়। যে-সংস্থা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, তারাই ওই ক্যাম্পাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দু’টি স্কুলই গড়েছিল।” |