যাঁরা লড়াইয়ের ময়দানে, জোট হয়েছে তাঁদের মধ্যেই। ফলে কার্যত নিরুত্তাপ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে চলেছে কালনা কলেজে।
কালনা কলেজে নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর। প্রার্থী নির্বাচনের জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তৈরি করে ৬ জনের একটি কমিটি। তবে শুরু থেকেই প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের মধ্যে ছিল মতানৈক্য। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি অংশ ৩০টি আসনের সবক’টির জন্যই মনোনয়ন পত্র তোলে। সংগঠনের অপর গোষ্ঠী তোলে ২৪টি মনোনয়ন পত্র। পাশাপাশি সব আসনে মনোনয়ন পত্র তোলে ছাত্র পরিষদও। ১৫ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এর আগে পর্যন্ত দু’টি গোষ্ঠীকে একত্রিত করার চেষ্টা চালিয়ে যায় টিএমসিপির জেলা নেতৃত্ব। দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় মাঠে নামেন জনা কয়েক তৃণমূল নেতাও। শেষমেশ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যে গোষ্ঠী সবক’টি আসনের জন্য মনোনয়ন পত্র তুলেছিল, তারা ৫টি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে। সংগঠনের অন্য গোষ্ঠী প্রত্যাহার করে নেয় ১৬টি মনোনয়ন পত্র। এমনকী, ১৪টি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় ছাত্র পরিষদও। |
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে জোট না হলেও পরে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে জোট হয়। ঠিক হয়েছে, ২২টি আসনে লড়াই করবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বাকি ৮টি আসন থাকবে ছাত্র পরিষদের। নিজেদের ২২টি আসন নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠী এর পরে আলোচনায় বসে। সংগঠন সূত্রে খবর, যে গোষ্ঠী ৮টি মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিল, তারা সাত জনকেই রেখে দিয়ে চায়। এসএফআই এবং অন্যান্য সংগঠন যেহেতু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেনি, তাই জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ায় পদ নিয়েও মতানৈক্য তৈরি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত জোটের রাস্তা থেকে সরে আসে ৮টি মনোনয়ন তোলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীটি। সোমবার কলেজ গেটের সামনে একটি সভা করে এই গোষ্ঠী। সেখানে তারা জানিয়ে দেয়, নির্বাচনে তাঁদের প্রার্থী থাকলেও ভোট পর্বে তাঁরা অংশগ্রহণ করছেন না। এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেওয়া সমরজিৎ হালদারের কথায়, “দু’টি গোষ্ঠী থাকলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা ভোটপর্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছি। তবে কলেজে নির্বাচনে জোটের বিরোধী আমরা।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি গোষ্ঠী সরে দাঁড়ানোয় সংসদ নির্বাচন কার্যত দাঁড়াল জোটকেন্দ্রিক। তবে জোটের মধ্যেই আসনের থেকে বেশি প্রার্থী থাকায় দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক পলাশ মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং ছাত্র পরিষদের ভোটে অংশগ্রহণকারী ৪১ জনের মধ্যে কারা জোটের আসল প্রার্থী তা ইতিমধ্যেই লিফলেট দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।”
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া বাকি ১১ জন কী করবে? পলাশবাবুর জবাব, “তারা জোটের পক্ষে প্রচার করবে। এমনকী, তালিকায় নিজেদের নাম থাকলেও ওরা নিজেদের ভোট দেবে না।” ছাত্র পরিষদের তরফে কংগ্রেস নেতা তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “আমরা জোটের ব্যাপারে আন্তরিক ছিলাম। জোট হয়েছে।”
তাই ভোট হচ্ছে, অথচ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ নেই। |