আবাসিক এলাকায় নিয়মের তোয়াক্কা না করেই জুতোর গুদাম তৈরি
হয়েছিল। শনিবার শিলিগুড়ির মহানন্দাপাড়ার চার্চ রোডে সেই গুদামেই আগুন লাগে। সেই সঙ্গে উস্কে দেয় ‘আমরি’র স্মৃতি।
আদপে আবাসন হলেও ‘নন্দকিশোর ভবন’-এর চার তলার একাধিক ঘর ভেঙে তৈরি হয়েছিল চামড়া আর জুতোর গুদাম। দমকল ও পুলিশের সন্দেহ, বিদ্যুতের শর্ট-সার্কিট থেকেই এ দিন সেই গুদামে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে যায়। আতঙ্কে আবাসনের বাসিন্দারা হুড়মুড়িয়ে নেমে আসেন নীচে। ঘন্টাখানেকের চেষ্টায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় কিছু মানুষের অভিযোগ, খবর দেওয়ার পরেও দেরিতে আসে দমকল।
দমকলের সহকারী ডিরেক্টর (উত্তরবঙ্গ) উদয়নারায়ণ অধিকারী বলেন, “বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে গেলে যে সব অগ্নিনির্বাপক বিধি মানা দরকার, এ ক্ষেত্রে তার কিছুই হয়নি। তার উপরে অবৈধ ভাবে মজুত করা হয়েছে দাহ্য বস্তু।’’ দমকল কর্তাদের আশঙ্কা, গভীর রাতে ওই আগুন লাগলে ভয়ঙ্কর কাণ্ড হতে পারত। প্রাথমিক ভাবে ওই গুদামের মালিকানা তিন জনের নামে ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁদের খোঁজ চলেছে। |
চার্চ রোডে গুদামে আগুন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
দশটি গুদামে জুতো, রবারের চপ্পল ডাঁই করা ছিল। বাড়ির মালিকও এ ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারেন না বলে পুলিশের দাবি।
ওই ভবনেরই দোতলায় থাকেন মালা শর্মা। তিনি অকপটেই বলছেন, “আমার ছেলে ওই ঘর ভাড়া দিয়েছে। সেখানে জুতোর গুদাম ছিল জানতাম। এ দিন দুপুরে পাশের ফ্ল্যাটের লোকেরা আগুন লাগার খবর দেন।” মালাদেবীর পড়শি শান্তি গোয়েল এ দিন দুপুরে ছাদে গিয়েছিলেন। তিনিই প্রথমে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। শান্তিদেবী বলেন, “নাতি ছাদে খেলতে গিয়েছে দেখে আমিও উঠেছিলাম। তখনই দেখি ছাদের মাঝ বরাবর ফাঁকা অংশ দিয়ে আগুনের হল্কা। ছুটে দোতলায় নেমে এসে বাড়ির মালিক এবং তাঁর ছেলেকে জানাই।”
আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুরকর্তারা। বহুতলের অবৈধ গুদাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা। ভবনের বাসিন্দারাও তাঁদের ক্ষোভ আড়াল করেননি। মেয়র পরিষদ পূর্ত কৃষ্ণ পাল বলেন, “ব্যবসায়ীরা যদি ভেবে থাকেন অবৈধ গুদাম করবেন, নকশা না মেনে নির্মাণ কাজ করবেন, তা হলে ভুল করছেন। পুরসভা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। ইতিমধ্যেই শহরের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে যে অভিযান শুরু হয়েছে, তা চলবে। যাঁরা এ ভাবে কারবার করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |