ওড়না দিয়ে হাত, মুখ বাঁধা অবস্থায় এক গৃহবধূর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে বালির দুর্গাপুরের ঘটনা। রীনা কুমারী (২৮) নামে ওই বধূর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমেছে সিআইডি।
পুলিশ জানিয়েছে, রীনাদেবীর রক্তাক্ত দেহটি পড়ে ছিল তাঁর ঘরের মেঝেতে। একটি হাত খাটের পায়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে বাঁধা। অন্য একটি ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল মহিলার মুখও। সালোয়ার কামিজ পরা ওই মহিলার পেটে, হাতে ও গলায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা, প্রচণ্ড আক্রোশ থেকে অপেশাদার কেউ এই খুন করেছে।
|
নিহত বধূ রীনা কুমারী। |
ঘরের টেবিল থেকে তিনটি খালি চায়ের কাপ পাওয়া গিয়েছে। অনুমান, রীনাদেবীর পরিচিত লোকজনই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। পুলিশ তিনটি চায়ের কাপ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছে।
বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা রীনার সঙ্গে চার বছর আগে ভাগলপুরের নরেন্দ্র কুমারের বিয়ে হয়। এক বছর আগে কলকাতায় চাকরির সূত্রে নরেন্দ্র স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে বালিতে বাড়ি ভাড়া করে চলে আসেন। নরেন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছেন, বিহারে একটি চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তিনি বেরিয়ে যান। তাঁর দাবি, শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে উঠে স্ত্রীর মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করলে সেটি বেজে যায়। পরে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। খারাপ কিছু আশঙ্কা করে, তাঁর পিসতুতো ভাই অমিত মাহাতোকে ফোন করে নরেন্দ্র রীনার কাছে যেতে বলেন। অমিতবাবু এসে দেখেন, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর বৌদি পড়ে রয়েছেন। পাশে খাটের উপর মুখ বাঁধা অবস্থায় রয়েছে নরেন্দ্র-র দু’বছরের ছেলে। অমিতের ফোন পেয়ে নরেন্দ্র বাড়ি ফিরে আসেন।
ঘরের মেঝেতে রক্তের মধ্যে কয়েকটি পা ও হাতের ছাপ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ নরেন্দ্রর হাতের ছাপ সংগ্রহ করে। নরেন্দ্র ও রীনার মোবাইল ফোন দুটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মোবাইলের কললিস্ট দেখে পুলিশের মনে হচ্ছে, একাধিক পরিচিত ব্যক্তি খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নরেন্দ্র ও অমিতের বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। |