মাথা তোলার ফুরসত নেই! কাঁচি দিয়ে জুতোর নীচে এঁটে থাকা কুচো পাথর এবং ময়লা পরিষ্কার করতে এতটাই ব্যস্ত পেন ওরজি! ডেম্পো ম্যাচে যে জুতো সোনা ফলিয়েছিল, তা অতি যত্নে সাফ-সুতরো করার পর ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের প্রাণভ্রমরা বললেন, “গতবার অল্পের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এ বার আই লিগের মাঝে কোনও বাধা এলে, কাঁচি দিয়ে ছেঁটে দেব,” হেসে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়লেন পেন।
পেন একা নন, শনিবার সকালে অনুশীলনের সময় লাল-হলুদ ব্রিগেডের বডি ল্যাঙ্গোয়েজ থেকেও যেন ওই ধারালো মনোভাবের ফুলকি ঠিকরে বেরোচ্ছিল। ডেম্পোর বিরুদ্ধে সত্তর মিনিটের স্বপ্নের ফুটবল, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আবার ‘গোল গ্রহে’ পেনের প্রত্যাবর্তনের চেয়েও ইস্টবেঙ্গলকে আপাতত স্বস্তি দিচ্ছে চ্যাম্পিয়নের সরণিতে উঠে পড়ার তৃপ্তি। সব মিলিয়ে অনেক দিন পর টগবগে লাল-হলুদ শিবির। এতটাই যে, গোড়ালির চোটের জন্য টোলগে অনুশীলন না করলেও সেটাকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছেন না ট্রেভর মর্গ্যান। বললেন, “টোলগের পায়ে সামান্য ব্যথা আছে। পৈলান ম্যাচে ওকে খেলাব না।” |
অস্ত্রে শান পেনের। শনিবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
টোলগের চোট। অ্যালান গাওয়ের সুস্থ হতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে। দু’জনেই সারাক্ষণ জিমে সময় কাটালেন। মর্গ্যানের ক্লাসে টোলগে-গাওয়ের অনুপস্থিতি স্বাভাবিক। কিন্তু উগা ওপারা? তিনি কোথায়? কেন আসেননি সঠিক বলতে পারলেন না মর্গ্যানও। শুধু বললেন, “আমি জানি না। ওর আসার কথা ছিল। শুনেছি পেট খারাপের সমস্যায় আসতে পারেনি।” ওপারা যদি না খেলতে পারেন, তা হলে স্টপারে নির্মল ছেত্রীর পাশে গুরবিন্দর সিংহকে তৈরি রাখছেন মর্গ্যান। মাঝমাঠে পেন-মেহতাব জুটি। ফরোয়ার্ডে বলজিৎ-লেন। গোলে গুরপ্রীত সিংহ। অর্থাৎ ওপারা না খেললে, পৈলানের বিরুদ্ধে এক জন বিদেশি নিয়েই নামতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। এ দিন অনুশীলনে সামান্য চোট পেয়েছেন খাবরা। তাঁকেও খেলাচ্ছেন না মর্গ্যান।
আই লিগে এখনও পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি ফেডারেশনের নিজস্ব দল পৈলান। আগের ম্যাচে প্রয়াগ ইউনাইটেডকে আটকানোর পর অবশ্য কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরেছে সুখবিন্দর সিংহের টিমে। যত আত্মবিশ্বাসই থাক, ইস্টবেঙ্গলে বিস্ফোরণ ঘটানোর মতো বারুদ কি পৈলানে আছে? শনিবার অনুশীলনের পর কোচ সুজিত চক্রবর্তী বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গল বড় দল। এ বারের আই লিগে সবচেয়ে ছন্দে খেলছে। তবে আমরাও লড়াই করব।” ইস্টবেঙ্গল অবশ্য কোনও ঝড়-ঝাপটা ছাড়াই পৈলান জংশন টপকাতে চাইছে। মর্গ্যান বলছিলেন, “যে করেই হোক আমার তিন পয়েন্ট চাই। ওদের দলে দৌড়ানোর লোক থাকলেও জিততে অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।”
পৈলানের শক্তি দৌড়। ইস্টবেঙ্গলেও দৌড়ানোর লোকের অভাব নেই। পেন, মেহতাব, সঞ্জু, ভাসুম, নওবা-- সবাই ছটফটে। এখন দেখার, দৌড়ের পাল্টা দৌড় দিয়ে গোলের ব্যবধান কতটা বাড়াতে পারেন পেনরা?
|
ইস্টবেঙ্গল : পৈলান অ্যারোজ (যুবভারতী, ২-০০) |