ফেসবুকে মুখ দেখানো নিষেধ ওবামা-কন্যাদের |
‘ঐতিহাসিক’ নির্বাচনটায় লড়ার সময়ে এই ওয়েবসাইটটাই ছিল তাঁর বড় ভরসা। তখন এখানেই মাউসের ক্লিকে তাঁর মতাদর্শ কিংবা বক্তৃতায় সায় দিয়েছেন হাজার হাজার ভক্ত। কেউ বা তাঁর ছবির পোস্টার দেখে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এমনকী নির্বাচনী তহবিল গড়ার পিছনেও অবদান কম ছিল না ‘ফেসবুক’-এর। এই সে দিনও বারাক ওবামার নামাঙ্কিত ফেসবুক পেজ-এ আপলোড হয়েছে তাঁর সাম্প্রতিকতম সপরিবার ছবি। সেই ছবি ‘লাইক’ করেছেন ৭১ হাজার ভক্ত। জমা পড়েছে প্রায় ১১ হাজার মন্তব্য।
ফেসবুক ছাড়া চলে না মার্কিন প্রেসিডেন্টের। অনেকে তো তাঁকে ‘প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া প্রেসিডেন্ট’ বলেও আখ্যা দেন। অথচ সেই তিনিই কি না তাঁর দুই কন্যাকে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত খুলতে দেননি! এক সাক্ষাৎকারে ‘চাঞ্চল্যকর’ এই তথ্য ‘ফাঁস’ করেছেন বারাক ওবামা নিজেই। বলেছেন, “একগাদা অচেনা লোক আমাদের সব কিছু জেনে ফেলবে কেন? এর কোনও মানে হয় না!” ‘সব কিছু’ মানে? পরিবারের একান্ত ব্যক্তিগত কোনও খবর না মার্কিন রণনীতির গূঢ়তম তথ্য? কী আশঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্ট? সেটা অবশ্য খোলসা করেননি তিনি। বড় মেয়ে মালিয়ার বয়স এখন ১৩। ছোট সাশা দশে পড়েছে। তাদের ওপর বাবার হুকুম, আরও চারটে বছর ফেসবুক নৈব নৈব চ। হাসতে হাসতে ওবামা বলেছেন, “দেখব এই চার বছর ওদের কেমন লাগে!”
এই ‘কেমন লাগে’টাই বড় গোলমেলে প্রশ্ন। নিউ ইয়র্কের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা বলছে, বাবা-মায়েদের একটা বড় অংশ এখন তাঁদের সন্তানদের ওপরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার নিয়ে বিধিনিষেধ তো চাপাচ্ছেনই না, উল্টে তাদের হয়ে অ্যাকাউন্টটা পর্যন্ত খুলে দিচ্ছেন। যেমন, ফেসবুক-সদস্য হওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৩। অথচ সেখানে এমন অনেকেরই হদিস মিলবে যারা বারোর গণ্ডিও টপকায়নি। সমীক্ষা বলছে, এমন প্রত্যেক চার জন ‘খুদে’ ফেসবুক-সদস্যের মধ্যে তিন জনেরই অ্যাকাউন্ট-প্রাপ্তি বাবা-মায়ের সৌজন্যে। এঁদের কেউ চান, সন্তান ছোট থেকেই প্রযুক্তির সঙ্গে গা ঘষাঘষি করে বেড়ে উঠুক। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সৌজন্যে সেটা হলে মন্দ কী? আবার অনেকে মনে করেন, ভবিষ্যতে ছেলে-মেয়ে এই সব সাইটের দিকে ঝুঁকবেই। তখন বাধা দিতে গেলে অনর্থ বাধবে। তার চেয়ে ব্যাপারটা আগেভাগে সেরে রাখাই ভাল।
কিন্তু সাশা-মালিয়ার যে ‘অনর্থ’ বাধিয়েও লাভ নেই। অথচ তাদের বাবার ফেসবুক পেজে আগামী ভোটের হাওয়া উঠে গিয়েছে। ফেসবুকেই তো রয়েছে বাবার সঙ্গে ওদের ছুটি কাটানোর ছবি। বাইরের ‘অচেনা’ লোকগুলো বুঝি সেই ছবিগুলো দেখছে না! চারটে বছর ধরে এমন অনেক রাগ ঝেঁপে এলেও সত্যিই কিচ্ছুটি করার নেই ওদের। |