চিন্তায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
ভারত-বিরোধী প্রচারে চিনা অস্ত্র নেপালের এফএম
ত্তরবঙ্গের পানিট্যাঙ্কিতে বাজছে নেপালের এফএম রেডিও। তাতে গান-বাজনা, অনুরোধের আসরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ভারত-বিরোধী প্রচার! স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভিযোগ, এই সব ঘটনায় চিন পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিতে প্রভাব বাড়িয়ে নয়াদিল্লিকে চাপে রাখার চেষ্টা বেজিংয়ের নতুন নয়। কৌশলগত কারণে নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, মায়ানমার এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা চালায় চিন। গোয়েন্দাদের অভিযোগ, ভারত-বিরোধী মনোভাব তৈরির জন্য নেপালে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্টাডি গ্রুপও তৈরি করেছে বেজিং। কিন্তু এ বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট এসেছে, নেপালের এফএম রেডিও চ্যানেলকেও ভারত-বিরোধী প্রচার চালানোর কাজে লাগানো হচ্ছে। এমন অন্তত পাঁচটি এফএম-চ্যানেল চিহ্নিত করেছেন গোয়েন্দারা। মজার কথা হল, নেপাল সীমান্তের প্রহরায় নিযুক্ত সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) চৌকিতেও এই সব এফএম-চ্যানেল শোনা যাচ্ছে! চিনের এই নয়া কৌশলে চিন্তিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
গোয়েন্দা সূত্রের বক্তব্য, মাওবাদী নেতা প্রচণ্ড-র দল ইউসিপিএন (ইউনিফায়েড কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল)-এর উপরে চিনের প্রভাব যথেষ্টই। বেজিংয়ের তরফে ইউসিপিএন নেতৃত্বকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে, ভারতই প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসতে দিচ্ছে না। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, প্রচণ্ডর দলের যুব সংগঠন ইয়ুথ কমিউনিস্ট লিগের সদস্যদের প্ররোচিত করে ভারত-বিরোধী প্রচারের কাজেও লাগানো হচ্ছে। চিনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বা স্টাডি গ্রুপের আড়ালে এই কাজ চলছে।
আজ এসএসবি-র ডিজি প্রণয় সহায় বলেন, “এই কেন্দ্রগুলির অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। সম্প্রতি নেপাল হয়ে এ দেশে বেআইনি ভাবে ঢোকার সময় দুই চিনা নাগরিককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।” কী কারণে তাঁরা নেপালের মাধ্যমে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন এসএসবি-কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যত ক্ষণ কাঠমান্ডুর উত্তরে চিনের কার্যকলাপ সীমিত রয়েছে, তত ক্ষণ কোনও চিন্তা নেই। কাঠমান্ডুর দক্ষিণে, ভারতের দিকে চিনের জাল ছড়িয়ে পড়লেই মুশকিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, নেপালি এফএম রেডিওতে ভারত-বিরোধী প্রচারের বিষয়টি কাঠমান্ডুকেও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভাল করতেও উদ্যোগী হয়েছে ভারত। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাঠমান্ডু সফরে দু’দেশের আর্থিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার চেষ্টা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা অবশ্য বলছেন, চিন খুব ধীরে ধীরে জাল ছড়াচ্ছে। এবং এ ব্যাপারে তারা কোনও তাড়াহুড়ো করছে না।
ভারত-বিরোধী প্রচারে মদত দিলেও চিন নেপালের মাধ্যমে ভারতে বেআইনি অস্ত্র ও জাল নোট ঢোকানোর চেষ্টা করছে বলে কোনও প্রমাণ পাননি গোয়েন্দারা। পাকিস্তানের দিক থেকে অবশ্য সে চেষ্টা অব্যাহত বলে অভিযোগ গোয়েন্দাদের। এসএসবি-র ডিজি বলেন, “পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তের অধিকাংশেই কাঁটাতার বসে গিয়েছে। তুলনায় নেপালের সীমান্ত অরক্ষিত। তাই এখন নেপালের মধ্যে দিয়ে জঙ্গি-অনুপ্রবেশ, জাল নোট ও বেআইনি অস্ত্রপাচার বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট, শুধু জাল নোট নয়, নোট ছাপানোর কাগজ এবং কালিও ঢুকছে নেপাল থেকে।
এ বিষয়ে নেপাল পুলিশকেও সচেতন করা হয়েছে। যার ফলে সম্প্রতি নেপালে ৩ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় জাল নোট ধরা পড়েছে। ভারত-নেপাল সীমান্তের মধ্যে এখন ৪৫০টি চৌকি রয়েছে। দু’টি চৌকির মধ্যে গড় দূরত্ব সাড়ে চার কিলোমিটার। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরও ৮৯টি সীমান্তচৌকি তৈরি করতে চায় এসএসবি। তাতে দু’টি চৌকির মধ্যে দূরত্ব সাড়ে তিন কিলোমিটারের নীচে নেমে আসবে। তখন এই ধরনের অপরাধ অনেকটাই কমবে বলে আশাবাদী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.