পানা সরিয়ে মিলল চোলাই
চুরি পানা ভর্তি পুকুরে ডুবিয়ে রাখা ব্যাগের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো চোলাই ভর্তি কয়েকটি বোতল। কোথাও আবার ঠান্ডা পানীয়ের বোতলে মিলল চোলাই। খোদ জেলা সদর বাঁকুড়া শহরে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে আবগারি দফতরের কর্মীরা এ ভাবেই নানা জায়গা থেকে প্রচুর চোলাই মদ উদ্ধার করলেন। চোলাই তৈরির সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়। অভিযান হয় বিষ্ণুপুরেও। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নিতুড়িয়া ও পুরুলিয়াতেও অভিযান হয়েছে।
সংগ্রামপুরের বিষ মদ কাণ্ডের পরে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় আবগারি দফতরের চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান গতি পেয়েছে। এ দিন দুপুরে বাঁকুড়ায় পুলিশ ও আবগারি দফতর যৌথ ভাবে অভিযান চালায়। প্রথমে বাঁকুড়া শহরে মাচানতলায় একটি বস্তির চোলাইয়ের ঠেকে তাঁরা যান। পুলিশ দেখেই কয়েক জন দৌড়ে পালান। মাটিতে পড়েছিল কয়েকটি খালি কাচের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস। সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা হানা দেন লালবাজার বাইপাস এলাকার আর একটি বস্তিতে। সেই ঠেকে কয়েক জন মহিলা ছিলেন।
বাঁকুড়ায় অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।
ঠান্ডা পানীয়ের দেড় লিটারের ৯টি বোতল ভর্তি চোলাই পাওয়া গেল। ভাটি থেকে রবারের থলিতে চোলাই ভরে বিক্রির জন্য ঠেকগুলিতে পাঠানো হয়। এখানে সেরকম দুটি চোলাই ভর্তি থলি উদ্ধার করা হয়। ফেরার সময় পুলিশ কর্মীরা মদ বিক্রেতা ওই মহিলাদের ধমক দিয়ে বলেন, “চোলাইয়ের ব্যবসা বন্ধ করো। আর ক্ষমা করব না। এ বার বিক্রি করলে তুলে নিয়ে সোজা গারদে ভরে দেব।” সেখান থেকে তাঁরা ভাদুল গ্রামের টিনের চালার একটি বাড়ির সামনে যান। ঘরে তল্লাশি চালিয়ে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেল না। ঘরের পাশে কচুরি পানায় ঢাকা একটা ছোট্ট পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে চক্কর মেরেও কিছু পাওয়া গেল না। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে থাকা কয়েক জন লোক পুকুরের জলে কয়েকবার লাঠির বাড়ি মারলেন। কাচে আঘাতের শব্দ উঠল। পানা সরিয়ে হাঁচু সমান জলে নেমে তাঁরা সেই জায়গা থেকে তুলে আনলেন দুটি ব্যাগ। তার ভিতরে ছিল চোলাই ভর্তি ৬টি বোতল। ধলডাঙা মোড় থেকে বিষ্ণুপুরের পথে রাস্তা থেকে খানিক দূরে মাঠের উপরে প্লাস্টিকের চালা ঘরের নীচে কয়েক জন লোক বসেছিলেন। দৌড়ে গেলেন পুলিশ ও আবগারি কর্মীরা। তাঁদের দেখে সেই লোকজন মাঠ দিয়ে দৌড় লাগান। সেখানে গিয়ে বেশ কয়েকটি চোলাই ভর্তি বোতল পাওয়া গেল। জুমুরজুড়িতে একটি পুকুর পাড়ে চোলাই তৈরি হয়। সেখানে হানা গিয়ে ১১৫ লিটার চোলাই উদ্ধার হয়। আবগারির এক আধিকারিক জানান, মোট ২১৫ লিটার চোলাই ও আরও কয়েক লিটার চোলাই তৈরির উপকরণ পাওয়া গিয়েছে।
অন্য দিকে এ দিন বিষ্ণুপুরের বনকাটি, দ্বাদশবাটি, চৌবেটা ও ফুলবনি প্রভৃতি গ্রামে আবগারি দফতরের কর্মীরা অভিযান চালান। ১৩২ লিটার চোলাই ও কয়েকশো লিটার চোলাই তৈরির উপকরণ বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে দিনের শেষে এক জনকেও আবগারি দফতর ও পুলিশ ধরতে পারেনি। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তবে কি খবর পাঠিয়েই আবগারি কর্মীরা ওই ঠেকগুলিতে হানা দিয়েছিলেন? আবগারি দফতরের কর্মীরা অবশ্য তা মানতে চাননি। তাঁরা জানান, চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান আরও বাড়ানো হবে।
নিতুড়িয়া থানার অযোধ্যা, ভিরিঙ্গি, রায়বাঁধ ও শালতোড় গ্রামে পুরুলিয়া আবগারি দফতর অভিযান চালায় বৃহস্পতিবার রাতে। ঝাড়খণ্ড ও আসানসোল লাগোয়া ওই গ্রামগুলিতে চোলাই মদের কারবার রমরমিয়ে চলত বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল। এ দিন পুরুলিয়ার ভূঁইয়া পাড়া-সহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ মদের ভাটি ভাঙা হয়। আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেডেন্ট শিশিরকুমার দাস বলেন, “চোলাই বিক্রি করার জন্য নিতুড়িয়া থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবৈধ মদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.