|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর |
কামারহাটি |
অবহেলার ঝিল |
প্রসেনজিৎ পাঠক |
ঝোপঝাড়ে ভরা। পাড়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য শৌচাগার। এলাকার নোংরা জল দিনের পর দিন এখানে জমে। বর্ষায় পাড় ছাপিয়ে নোংরা জল এলাকায় ঢুকে পড়ে। রয়েছে দুর্গন্ধের সমস্যা এবং মশা-মাছির উপদ্রবও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে কামারহাটি পুরসভার নন্দননগরে কয়েকটি ঝিলের এখন এই অবস্থা। বাসিন্দাদের একাংশও এর জন্য দায়ী। কিন্তু, বার বার জানানো সত্ত্বেও পুরসভা বা উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতর এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
স্বাধীনতার আগে রেললাইন পাতার জন্য মাটি কাটার ফলে এই এলাকায় তৈরি হয়েছিল অসংখ্য ঝিল। পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকায় মোট ২১টি ছোট-বড় ঝিল রয়েছে। স্বাধীনতার পরে ঝিল ও সংলগ্ন অঞ্চল রাজ্যের উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতর অধিগ্রহণ করে। ১৯৫০ সাল থেকে ছোট ছোট প্লটে ওই জমি উদ্বাস্তুদের মধ্যে বণ্টন শুরু করে ওই বিভাগ। গড়ে ওঠে কলোনি। পরবর্তী সময়ে এর মধ্যে কয়েকটি ঝিলে মাছ চাষও শুরু হয়। কিন্তু বেশ কয়েকটি ঝিলে তা হয়নি। এই ঝিলগুলি সংস্কারের অভাবে আগাছায় ভরে উঠেছে। |
|
কামারহাটি পুরসভার ৩০ এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ পল্লি, নেতাজি পল্লি, ক্ষুদিরাম পল্লি, রামকৃষ্ণ পল্লি, অরুণোদয় পল্লি প্রভৃতি এলাকার বদ্ধ ঝিলগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। অভিযোগ উঠেছে, বাসিন্দাদের একাংশ দীর্ঘ দিন এই ঝিলে আবর্জনা ফেলেন। ময়লা পড়ে কয়েকটি ঝিল প্রায় মজে গিয়েছে। তার উপরে ঝিলের পাড়ে অপরিকল্পিত ভাবে অসংখ্য শৌচাগার তৈরি হয়েছে। দরমার বেড়া ঘেরা এই শৌচাগারগুলি কলোনির বাসিন্দাদের একাংশ ব্যবহার করেন। ফলে দুর্গন্ধের পাশাপাশি মশা-মাছির দাপটেও অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। গরমকালে প্রাণান্তকর অবস্থা হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার পক্ষ থেকে ঝিলের পাড়ে বেশ কিছু ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করা হলেও ঝিল সংস্কার বা আগাছা সাফাইয়ে উদ্যোগী নয় পুরসভা। প্রয়োজনের তুলনায় অল্প কীটনাশক ছড়ানো হয়। বাসিন্দাদের দাবি, অপরিষ্কার ঝিলগুলিকে পরিষ্কার করে মাছ চাষ শুরু করলে ঝিলগুলি পরিষ্কার থাকবে। পাশাপাশি অর্থও উপার্জন হবে। |
|
কামারহাটির পুরপ্রধান সিপিএমের তমাল দে বলেন, “পুরসভা ঝিলগুলি মাঝেমধ্যে সাফ করে। পূর্ণাঙ্গ সাফাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও শ্রমিকের সমস্যা রয়েছে। বাসিন্দারা লিখিত আবেদন করলে পুরসভার পক্ষ থেকে উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরকে জানাব।” উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্বপ্রাপ্ত উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের আধিকারিক ভবসিন্ধু মণ্ডলের কথায়: “বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখব। দ্রুত কিছু করা যায় কি না সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আগে জানা ছিল না। খোঁজ নিচ্ছি। দূষণ প্রতিরোধে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখছি।”
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ। |
|
|
|
|
|