কোনও সেতুর ঠিকঠাক মেরামতি হয়নি প্রায় ৪০ বছর। কোন সেতু ৩০ বছর ধরে জীর্ণ। সব মিলিয়ে এমন ৯টি বিপজ্জনক সেতু রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। দার্জিলিঙে বিজনবাড়ি কাণ্ডের পরে সরেজমিন সমীক্ষায় নেমে এ তথ্য পেয়েছে পূর্ত দফতর। বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের পূর্ত দফতরের সমীক্ষক দল হিলি সীমান্তের যমুনা সেতু এবং পতিরামের ইছামতি সেতু পরীক্ষাও করেছে। পূর্ত দফতরের মোবাইল ব্রিজ ইন্সপেক্টশন বিভাগ ওই সমীক্ষা করছে। জেলা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার ফয়েজ আহমেদ বলেন, “দফতরের সিভিল ও মেকানিক্যাল বিশেষজ্ঞের ৯ জনের একটি দল অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে জেলার পুরনো ৯টি সেতু পরীক্ষার কাজ করছেন। ওই বিশেযজ্ঞ দলের পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমীক্ষা চলবে। অভিযানে জেলা পূর্ত দফতরের বাস্তুকার ছাড়াও রয়েছেন বিশেযজ্ঞ বাস্তুকার তূষার পাল এবং শান্তনু কুন্ডু। |
বিজনবাড়ি দুর্ঘটনার পরে রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের সমস্ত প্রধান সেতু গুলিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করতে আসরে নেমেছে। তৈরি হয় ভ্রাম্যমাণ সেতু পর্যবেক্ষণ ইউনিট। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের ৯টি সেতু চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে হিলির যমুনা সেতু, বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর উপর সরোজরঞ্জন সেতু, কুমারগঞ্জের আত্রেয়ী সেতু, পতিরামের ইছামতি ও তালতলা মোড়ে রাজ্য সড়কের উপর আত্রেয়ী সেতু, গঙ্গারামপুরের পুনর্ভবা সেতু, তপনে নাথানিয়েল মুর্মু সেতু, বংশীহারিতে টাঙ্গন সেতু এবং কুশমন্ডিতে মহিপালদিঘি রোডে টাঙ্গন সেতু। প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষক দল জানতে পেরেছে, কোন সেতুর রেলিং ভেঙে গিয়েছে। জেলার বাস মালিক সমিতির সম্পাদক অশোক চৌধুরী বলেন, “পুরনো সেতু গুলির কার্যক্ষমতা মেপে ব্যবস্থা নেওয়ার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কারণ, সেতুগলির যা হাল তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।” পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, পুরনো আত্রেয়ীর সেতুগুলি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের শরিক হয়ে আছে ভারি ভারি যুদ্ধ-কামান এই সব সেতুর উপর দিয়ে পৌঁছেছিল। হিলি সীমান্তের সেতুগুলির উপর দিয়ে রোজ কয়েকশো পণ্যবোঝাই ভারি-ট্রাক চলাচল করে। ফলে সেতুগুলি দুর্বল হয়ে পড়া স্বাভাবিক বলে পূর্ত দফতরের বাস্তুকারেরা মনে করছেন। ইতিমধ্যে প্রধান রাজ্য সড়কে পতিরাম এলাকার তালতলা আত্রেয়ী সেতুর দুই জায়গায় রেলিং ভেঙে বিপজ্জনক অবস্থায়। ভাঙ্গা অংশ বাঁশ দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া খসে পড়েছে সিমেন্টের প্লাস্টার। সেতুর ডান ধারে সিমেন্টের দুটি পাটাতন ভেঙে তৈরি হয়েছে মরণফাঁদ। বালুরঘাটে আত্রেয়ীর সরোজ সেতুর অবস্থাও বিপজ্জনক। পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার ফয়েজ আহমেদ জানান, “শুক্রবার গঙ্গারামপুরের পুনর্ভবা ও পতিরামের আত্রেয়ী সেতু পরীক্ষা হবে।” |