‘শ্রমিক-স্বার্থে’ তৃণমূলের শ্রমিক ইউনয়ন আইএনটিটিইউসিকেও আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটে সামিল হওয়ার আহ্বান জানালেন সিপিআই সাংসদ তথা এআইটিইউসি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্ত।
বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের কচুয়ায় সিপিআইয়ের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে এক সমাবেশে হাজির ছিলেন গুরুদাসবাবু। সেখানেই তিনি বলেন, “এগারোটি শ্রমিক সংগঠন ওই বন্ধকে সমর্থন করছে। আমরা চাই, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনও শ্রমিক-স্বার্থে এই কর্মসূচিতে সামিল হোক।” ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা। ওই দিন ১১টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন দেশ জুড়ে ধর্মঘট ডাকায় এ রাজ্যে বিতর্ক ঘণীভূত হয়েছে।
গুরুদাসবাবু এ দিন আরও বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না হলেও বিধানসভা ভোটে তৃণমূল একক ভাবেই ক্ষমতায় আসতে পারত বলে মনে করেন সিপিআই নেতা তথা সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। তাঁর মতে, এর কারণ হল, বিগত বছরগুলিতে ‘বামেদের ত্রুটি।’ তাঁর বক্তব্য, “বামেদের ত্রুটিতেই এই বিপর্যয়। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে একটা-দু’টো ভুল নয়। আমরা মানুষের থেকে বিচ্যুত হয়েছিলাম। তারই সুযোগ নিয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূল।” ‘নবচিন্তা’ ও ‘নব কলেবরে’ বামেরা ফিরে আসবে বলেও ‘আশাবাদী’ প্রবীন সিপিআই নেতা। পাশাপাশি তিনি বলেন, “তৃণমূলের ন্যায়সঙ্গত কোনও কাজে আমরা বাধা দেব না। তবে, কাজের মধ্যে দিয়েই ওদের নিজেদের প্রমাণ করে দেখাতে হবে।” এ দিন ভাষণে কেন্দ্রেরও কড়া সমালোচনা করেছেন গুরুদাস। জঙ্গলমহলের সমস্যা শুধু ‘কোবরা দিয়ে সমাধান’ হবে বলেও তিনি মনে করেন না। এ জন্য ‘রাজনৈতিক সংগ্রাম’-এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন তিনি। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার আমরি এবং বিষমদ কাণ্ডে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন।
রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় মঞ্জুবাবু বলেন, “কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে ওরা। কোথায় সভা হবে, তা নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকছে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সর্বদল সভা হয় না।” আত্মসমালোচনার সুরে দলের রাজ্য সম্পাদক বলেন, “লড়াই-সংগ্রামের কথা আমরা ভুলে গিয়েছিলাম। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে, এটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল। আমরা এখন যোগ্য বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সিপিএমের কাছ থেকে তাঁরা যথেষ্ট ‘গুরুত্ব’ পান না বলে শরিক দল সিপিআইয়ের বরাবরের অভিযোগ। জেলা সিপিআই সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই জেলায় আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম বামপন্থী দল। সিপিএম বড় শরিক। কিন্তু আমাদের অস্বীকার করে বামফ্রন্টের আন্দোলন এগোতে পারে না।” বামফ্রন্টকে ‘ঐক্যবদ্ধ’ করার পাশাপাশি নিজেদের দল সিপিআইকেও ‘শক্তিশালী ও সংগঠিত’ করে ‘স্বাধীন ভাবে’ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। |