পুলিশ ক্যাম্পের অদূরেই একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটল বুধবার রাতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার আমঝাড়া গ্রামে দীপক বোস নামে এক রেশন ডিলারের বাড়িতে হামলা চালায় ১৫-১৬ জনের এক সশস্ত্র ডাকাত দল। বাড়িতে ঢুকে গৃহকর্তাকে মারধর করে যথেচ্ছ লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ডাকাতদের মারে গুরুতর আহত দীপকবাবুকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আক্রান্ত পরিবারের তরফে অভিযোগ ডাকাতির সময় কাছেই পুলিশ ক্যাম্পে ফোন করে খবর দেওয়া হলেও পুলিশ আসে ডাকাতেরা লুঠপাট চালিয়ে চলে যাওয়ার পরে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
ক্যানিংয়ের এসডিপিও পিনাকরঞ্জন দাস বলেন, “খবর পেয়েও সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ না যাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ যথাসময়েই ঘটনাস্থলে যায়। ডাকাতির অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ডাকাতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমঝাড়া গ্রামে রেশন ডিলার দীপক বোসের দোতলা বাড়ি। সেখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প ছিল। মাসখানেক আগে কিছুটা দূরেই একটি বাড়িতে ক্যাম্পটি উঠে যায়। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ ১৫-১৬ জনের একটি ডাকাত দল দীপকবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। শীতের রাতে সকলেই ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ দরজায় ধাক্কার আওয়াজ শুনে উঠে পড়েন দীপকবাবুর পুত্রবধূ লিলিদেবী। ভিতর থেকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন বাইরে কারা এবং কী জন্য এসেছেন। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বলে ডাকাতেরা। |
লিলিদেবী বলেন, “পুলিশ বলায় একটু স্বস্তি পাই। কারণ আমাদের বাড়িতে আগে পুলিশ ক্যাম্প ছিল। মাসখানেক আগে সেটা উঠে যায় কিছুটা দূরে একটা বাড়িতে। কিন্তু অনেকেই তা না জানায় মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে চলে আসেন। এদিন ওরা পুলিশ পরিচয় দেওয়ায় সেরকমই ভেবেছিলাম। কেন এসেছেন জিজ্ঞাসা করায় ‘ওরা বলে দীপকবাবুর সঙ্গে কথা বলতে চাই’। ইতিমধ্যে উঠে পড়েন দীপকবাবুও। তিনি এসে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে ডাকাতদলটি। দীপকবাবু বলেন, “সকলের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। আমাকে আলমারির চাবি দিতে বলে। কিন্তু রাজি না হওয়ায় আমারে মারধর শুরু করে। কোনওরকমে ওদের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে জানলার ধারে ছুটে গিয়ে পাশের বাড়িতে ভাই রতনের নাম ধরে ডাকতে শুরু করি।”
দীপকবাবুর ভাইঝি মৌসানা জানায়, জেঠার চিৎকার শুনে বুঝতে পারি ওই বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ক্যাম্পে ফোন করে সব জানাই। কিন্তু খবর পাওয়ার পরেও পুলিশ আসে ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর। দীপকবাবু বলেন, “আলমারির চাবি না দেওয়ায় একজন আমাকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে সজোরে মারে। তারপরে নিজেরাই সব ঘরে ঢুকে যথেচ্ছ লুঠপাট চালাতে থাকে। আলমারির চাবিও খুঁজে পায় ওরা। আলমারি খুলে টাকাকড়ি গয়নাগাটি নিয়ে নেয়। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ডাকাতেরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়।” তাঁর দাবি, নগদ টাকা, গয়নাগাটি মিলিয়ে লুঠ হওয়া ডিনিসের মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
অন্যদিকে এ দিন রাতেই বাসন্তী থানারই চরাবিদ্যা গ্রামে পর পর তিন মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন তিনটি মন্দিরের দরজার তালা ভাঙা। তার মধ্যে একটি মন্দির থেকে ধাতুর তৈরি বিগ্রহ ও অন্য দু’টি মন্দির থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র ও বিগ্রহের অলঙ্কার নিয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। চুরির বিষয়টি খিতে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। |