অগ্নিকাণ্ডের পরে আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিমা সংস্থার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদৌ পাবেন কি না, তা নিয়ে এ বার সংশয় দেখা দিয়েছে। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য যে সব শর্ত মানতে হয়, আপাত দৃষ্টিতে আমরি কর্তৃপক্ষ তা মানেননি বলে মনে করছে বিমা সংস্থার এজেন্টদের সংগঠন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক দে বলেছেন, “ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি, যে বেসমেন্টে গাড়ি রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে তারা দাহ্য পদার্থ মজুত করে রেখেছিল। বিমা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের গাফিলতির সামান্যতম প্রমাণ পাওয়া গেলেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না।” আমরি হাসপাতালের বিমা সংক্রান্ত ফাইলটিও খতিয়ে দেখতে চেয়েছে সংগঠন। মঙ্গলবারেই ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স-এর সিএমডি-কে ই-মেল করে সেই অনুরোধ করেছেন অশোকবাবুরা।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে জানানো হয়েছে, যে কোনও সংস্থা প্রতি বার বিমার কিস্তি জমা দেওয়ার আগে বিমা সংস্থার একটি সমীক্ষক দল গিয়ে ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে দেখে আসে। সংস্থাটি সব শর্ত মানছে কি না, সেটাই দেখে আসে সমীক্ষক দলটি। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে বিমা সংস্থার কাছে। আমরি-র ক্ষেত্রেও সংস্থার কাছে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই রিপোর্টটিই খতিয়ে দেখতে চায় এজেন্টদের সংগঠন। মঙ্গলবার অশোকবাবু বলেন, “যদি দেখা যায় সেই রিপোর্টে গাফিলতির কথা রয়েছে, তা হলে প্রশ্ন উঠবে, তার পরেও কী করে কিস্তির টাকা জমা পড়ল। আর যদি রিপোর্ট ঠিক থাকে, তা হলে প্রশ্ন উঠবে, এত গাফিলতির পরেও কী করে ‘ঠিক’ রিপোর্ট জমা পড়ল?”
বিমা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শেষ রাতে আগুন লাগার পর শুক্রবারই বিমা সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগুন এবং ধোঁয়ার ফলে হাসপাতাল ভবন ও তার যন্ত্রপাতির যে ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতিপূরণ মূলত তার জন্যই। ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স সংস্থার কলকাতা শাখার ডিজিএম অরুণ দে এ দিন বলেন, “শুক্রবারেই হাসপাতালের পক্ষে এক জন এসে সংস্থার বিবাদিবাগ অফিসে ওই চিঠি দিয়ে গিয়েছিলেন। শনিবারে আমাদের একটি সমীক্ষক দলকে দুর্ঘটনা স্থলে পাঠানোও হয়েছিল। কিন্তু, সেখানকার পরিস্থিতি এমন ছিল যে সমীক্ষা করা যায়নি। পরে আবার সমীক্ষক দল যাবে। তাদের রিপোর্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র খতিয়ে দেখে তার পরেই আমরা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।”
আমরির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে দ্রুত স্বাস্থ্য-বিমার টাকা পেতে পারেন, তার জন্য ওই হাসপাতালেই একটি বিশেষ কাউন্টার খুলতে চেয়েছে এজেন্টদের সংগঠন। সিএমডি-র কাছে সেই আবেদনও পাঠানো হয়েছে। অশোকবাবুর বক্তব্য, “যাঁরা এত দিন চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বা সে দিনের ঘটনার পরে যাঁরা এখন অন্য হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন, তাঁরা যাতে দ্রুত স্বাস্থ্য বিমার টাকা পান, তার জন্যই আমরা এই ব্যবস্থা করতে চাইছি।” ইতিমধ্যেই জীবন বিমার পক্ষে হাসপাতালে এ রকম একটি কাউন্টার খুলে সরাসরি সাহায্য করা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে। |