বিতর্কে মুকুন্দপুর আমরি
চক্ষু হাসপাতালের লাইসেন্সে চিকিৎসা শিশু ও প্রসূতির
সাইনবোর্ড বলছে, এটা শিশু ও প্রসূতিদের হাসপাতাল। রোগী ভর্তি হচ্ছে সেই অনুসারেই। অথচ স্বাস্থ্য দফতরের লাইসেন্স অনুযায়ী ওই জমিতে চোখের হাসপাতাল থাকার কথা। এই নিয়েই এ বার বিতর্কে আমরি হাসপাতালের মুকুন্দপুর শাখা।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। অবিলম্বে লাইসেন্স পরিবর্তন করা না হলে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চোখের হাসপাতাল গড়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে মুকুন্দপুরে ১ টাকা দামে জমি পেয়েছিল ‘ভিশন কেয়ার’ সংস্থা। শর্ত ছিল, ওই হাসপাতালে অন্তত ১০ শতাংশ শয্যায় দরিদ্রদের পরিষেবা দেওয়া হবে। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে সেই জমিতেই চোখের হাসপাতালের লাইসেন্সে গড়ে ওঠে আমরির ‘উওমেন অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল’। এত দিন পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্তাদের চোখের সামনে তা দিব্যি রমরমিয়ে চলেছে। ঢাকুরিয়া আমরির ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
এ দিন আচমকা মুকুন্দপুর হাসপাতাল পরিদর্শনে যায় স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল। তাতে ছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক, সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা (প্রশাসন) হিমাদ্রি সান্যাল-সহ আরও কয়েক জন। তাঁরাই জানিয়েছেন, লাইসেন্সের ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ নিয়ে এ দিন হাসপাতাল কর্তাদের প্রশ্ন করা হলে তাঁরা কোনও উত্তর দিতে পারেননি। বরং ভুল স্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন, ‘উওমেন অ্যান্ড চাইল্ড’ হাসপাতালের নামে লাইসেন্স পরিবর্তনের জন্য তিন মাস আগেই আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তা এখনও অনুমোদন পায়নি। শ্যামাপদ বসাকের কথায়, “আমরা যখন লাইসেন্স নিয়ে ওঁদের ভর্ৎসনা করলাম, ওঁরা মাথা নিচু করে শুনলেন। কোনও উত্তর দিতে পারেননি। আমরা বলে এসেছি, অবিলম্বে লাইসেন্স পরিবর্তন না-হলে হাসপাতালের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
ঢাকুরিয়ার হাসপাতালের ঘটনার পর কাগজপত্র ঘাঁটতে গিয়ে দেখা গিয়েছে মুকুন্দপুরের লাইসেন্সেও বিস্তর গন্ডগোল। এত দিন কি তা হলে কোনও কাগজপত্রই দেখা হয়নি? হিমাদ্রি সান্যাল বলেন, “এর আর কী উত্তর দেব? বুঝতেই পারছেন ওঁদের ক্ষমতা খুব বেশি ছিল। অনেকে ওঁদের পিছনে ছিলেন। কাউকে ওঁরা পরোয়া করতেন না। এখন তাঁরা মুশকিলে পড়েছেন বলে কিছু করতে পারছেন না।” যে সময়ে ওই জমি ও লাইসেন্স মুকুন্দপুরের আমরিকে দেওয়া হয় তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর যুক্তি, “আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলাম ঠিকই। তা বলে খুঁটিনাটি কোথায় কী হচ্ছে, তা দেখা তো আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমি তো ইন্সপেক্টিং অথরিটি ছিলাম না।”
সেই সময় স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ পদে থাকা কর্তারাও যে যাঁর মতো দায়িত্ব এড়িয়েছেন। কেউ বলেছেন, বিষয়টি জানতেন না। কারও সাফাই, সব জেনেও রাজনৈতিক ও অন্য নানা চাপে সব মেনে নিতে হয়েছে। প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই বিষয়গুলি স্বাস্থ্য অধিকর্তার দেখা উচিত। যখন মুকুন্দপুরের আমরি লাইসেন্স পেয়েছে তখন আমি স্পেশ্যাল সেক্রেটারি। আমার বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।” প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অনিরুদ্ধ কর যেমন বলেছেন, “ওই বড় বড় কর্পোরেট হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্য দফতর বা স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে গ্রাহ্যই করতেন না। আমরা অনেক রুখে দাঁড়িয়েও ওঁদের কিছু করতে পারিনি।”
কী বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (মেডিক্যাল) নির্মাল্যদেব মান্না এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.