আমরির আঁচ, পুরসভার নজরদারি
মরির ঘটনার পর শিলিগুড়ি শহরের নাসির্ংহোমগুলির পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়ে সর্বত্রই অনিয়ম নজরে পড়ছে পুর কর্তৃপক্ষের।
মঙ্গলবার প্রধাননগর এলাকার মেডিকা নর্থবেঙ্গল ক্লিনিক নার্সিংহোম পরিদর্শন করতে গিয়ে চমকে উঠেছেন পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদরা। পরিদর্শনে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, বাইরের একটি সংস্থা নার্সিংহোমটির স্বাস্থ্য পরিষেবার দায়িত্বে থাকলেও পুরসভার কোনও ট্রেড লাইসেন্স তাদের নেই। তা ছাড়া নার্সিংহোমে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থার মেন সুইচের ঘরে বিদ্যুতের তার এলোমেলো হয়ে বেরিয়ে রয়েছে। আপদকালীন পরিস্থিতিতে নার্সিংহোমের মধ্যে আটকে পড়া লোকজনদের বার হওয়ার পথগুলি সহজ নয়। ওয়ার্ডে ৮/৯ জন রোগীর জন্য বরাদ্দ একটি মাত্র শৌচাগার। নার্সিংহোম লাগোয়া একটি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ রোগীর খাবার তৈরি করেন। অথচ তাঁদের ব্যবসার অনুমোদন বা ফুড লাইসেন্স কিছুই নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগীদের খাবার তৈরি হচ্ছে। পার্কিংয়ের জায়গা আটকে এবং ভবনের একাংশে অবৈধ নির্মাণ করা হয়েছে। গত ২ দিনে শহরের ৭ টি নার্সিংহোম ঘুরে সবকটি ক্ষেত্রে অনিয়ম নজরে এসেছে পুর কর্তৃপক্ষের। সব দেখে অসন্তুষ্ট ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা নর্থ বেঙ্গল ক্লিনিক নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে বলে দেন, “ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এ ভাবে অন্য সংস্থা নার্সিংহোম চালাতে পারবে না। তাতে কোন কিছু অঘটন ঘটলে তাঁর দায় তারা সহজেই এড়িয়ে যাবে। তা ছাড়া এ ব্যাপারে নার্সিংহোমের তরফে পুরসভাকে কেন কিছু জানানো হয়নি তা বুঝতে পারছি না। পার্কিংয়ের জায়গা অবৈধ নির্মাণ মানা হবে না। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুরসভার তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।” পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া খাবারের দোকান চালানো যাবে না। ওই দোকান সিল করে দেওয়া হবে জানিয়ে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে রোগীদের খাবারের বিকল্প ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন দেবশঙ্করবাবু। মেডিকা নর্থ বেঙ্গল ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অরুণাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নর্থ বেঙ্গল ক্লিনিক এর নামেই ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া রয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য দফতরের শংসাপত্রও রয়েছে। যে সমস্ত বিষয়টি পুরসভার তরফে আপত্তি জানানো হয়েছে তা নিয়ম মাফিক করা হবে।” নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানান, রোগীদের খাবার সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছেন একটি খাবারের দোকান। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দোকানের মালিকপক্ষ জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষই তাদের জায়গা দিয়ে খাবার তৈরির বরাত দিয়েছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী বলেন, “নার্সিংহোমগুলি অনেক ক্ষেত্রেই একটি ঘরে অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করেছে। ৭/৮ জন রোগীর জন্য ১ টি শৌচাগার এ সব অনিয়ম ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ওই নার্সিংহোম ছাড়া খালপাড়ার দু’টি নার্সিংহোম এবং বর্ধমান রোডের একটি নার্সিংহোম পরিদর্শন করেন পুরসভার প্রতিনিধি দল। খালপাড়ার প্যারামাউন্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ট্রেড লাইসেন্স, স্বাস্থ্য বিভাগ বা দমকলের অনুমতি পত্র দেখাতে পারেননি। পার্কিংয়ের জায়গা নেই। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবও রয়েছে। নার্সিংহোমের কর্ণধার হরিশ কুমার সিঙ্গলা বলেন, “দমকলের প্রাথমিক ছাড়পত্র রয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স-সহ ওই সব নথিপত্র যাঁর কাছে ছিল তিনি ছিলেন না। দ্রুত পুর কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হচ্ছে।” আশীর্বাদ নামে খালপাড়ার অপর একটি নার্সিংহোমে পার্কিংয়ের জায়গা নেই বলে অভিযোগ। কর্ণধার মণীষা অগ্রবাল জানান, পুরনো নির্মাণ বলে কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে তাঁরা নিয়ম মাফিক ব্যবস্থা করবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.