ঘর-ভাড়ায় বিতর্ক স্কুলে
স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যাতে রাজনীতিতে জড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে নানারকম চেষ্টা চালাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। অথচ তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রভাবিত শিক্ষা মঞ্চের দখলে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতি, সেই শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল চলাকালীন তিনটি ক্লাসঘর ছাত্র পরিষদের নির্বাচনের জন্য ভাড়া দিয়েছেন। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি শহরে ঘটনাটি ঘটেছে। তা নিয়ে শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গেই দানা বাঁধছে নানা বিতর্ক। স্কুল সূত্রের খবর, সকাল ১০টা থেকে স্কুলের মাঠে মাইক বাজিয়ে নানা ঘোষণা করতে থাকেন ছাত্র পরিষদ নেতারা। সেখানেই ত্রিপল টাঙিয়ে ব্যারিকেড তৈরি হয়। তিনটি ক্লাস ঘরে ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রায় সন্ধ্যে পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া চলে। ওই সময়ে স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের পঠনপাঠনে বিঘ্ন ঘটে বলে অভিযোগ।
নিজস্ব চিত্র
স্কুল লাগোয়া একটি রাস্তার মুখে সংগঠনের পতাকা আটকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় নিত্যযাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে দুপুরের দিকে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয় ছাত্র পরিষদ। স্কুল সূত্রের খবর, এদিন মাধ্যমিকের ফর্ম ফিল আপ ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের ফল প্রকাশও হয় এদিন। ছাত্ররা স্কুলে ঢুকতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। অনেক অভিভাবককে জেরার মুখে পড়তে হয়। সব মিলিয়ে দিনভর শিলিগুড়ি শহরের অন্যতম ঐতিহ্য প্রাচীন স্কুলে পড়াশোনার কোনও পরিবেশই ছিল না বলে ছাত্রদের অনেকেরই অভিযোগ। অভিভাবকদের তরফে অনেকেই প্রধান শিক্ষক চন্দন দাসের ভূমিকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, বহুবার চন্দনবাবুকে গিয়ে বলার পরেও তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক মধুসূধন চক্রবর্তী ওই অনুমতি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে বিতর্কের মুখে পড়ার পরে মধূসুদনবাবুর বক্তব্য, “স্কুলের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নির্বাচনের অনুমতি দিতে বলেছি। এভাবে নির্বাচন হবে ভাবতে পারিনি। এভাবে ভাড়া দেওয়া অন্যায় হয়েছে।” শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন দাস জানান, ছাত্র পরিষদের নির্বাচনে স্কুলের কোনও অসুবিধে হয়নি। সব দিক ভেবেই তাদের তিনটি ক্লাস ঘর দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের খরচ তারা স্কুলকে দেবে। এটা নিয়ে হইচইয়ের কি আছে?” ছাত্র পরিষদের পক্ষে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নেতা ভুবন ভট্ট জানান, তাঁরা বিধি মেনে আবেদন করেই অনুমতি পেয়েছেন। তিনি বলেন, “তিনটি ক্লাস রুম এবং মাঠের একাংশ চেয়ে আমরা আবেদন করি। তাতে তিনটি স্তরে সাংগঠনিক নির্বাচনের কথা জানানো হয়। অনুমতি মেলার পরে নির্বাচন করা হচ্ছে। মাইক মাঝেমধ্যে বাজানো হয়েছে।” তিনটি ক্লাস রুমে ছাত্র পরিষদের উত্তরবঙ্গের ছয়টি জেলার কমিটি, রাজ্য কমিটি, এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পদাধিকারী নির্বাচন হয়। এই ঘটনার পরে ছাত্রদের অনেকেই প্রকাশ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের বলতে শোনা যায়, “স্কুলের সময়ে ছাত্র সংগঠনকে ক্লাসঘর ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। না হলে আগামী দিনে বিষয়টি মাত্রা ছাড়া হয়ে ওটার আশঙ্কা থাকবে।” শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা রঞ্জন শীলশর্মাও ঘটনার কথা শুনেছেন। ডেপুটি মেয়র বলেন, “স্কুলে শ্রেণিকক্ষ কখনও ভাড়ায় দেওয়া যায় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.