তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগ দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করা এক সদস্যের ভোটে পুঞ্চা ব্লকের পিঁড়রা পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলে রাখল তৃণমূলই। প্রধান পদে বহাল রইলেন তৃণমূলের মঞ্জুবালা সিংহ পাতর। পুঞ্চার বিডিও সুপ্রতীক সিংহ বলেন, “মঙ্গলবার ওই পঞ্চায়েতের প্রধান পদে নির্বাচন ছিল। ৪-৩ ভোটে ফের মঞ্জুবালাদেবীই প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।”
পিঁড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুমিত্রা মাহাতো এ বছর ১৫ অক্টোবর এলাকায় হ্যান্ডবিল দিয়ে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। হ্যান্ডবিলে তিনি দাবি করেছিলেন, তৃণমূল দল হিসাবে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হওয়ায় তিনি ওই দল ছেড়ে সিপিএমে যোগ দিলেন। এর জেরে পঞ্চায়েতের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। মোট সাতটি আসনের এই পঞ্চায়েতে সুমিত্রাদেবী-সহ তৃণমূল সদস্য সংখ্যা চার। সিপিএমের তিন জন সদস্য। সুমিত্রাদেবী দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করায় তৃণমূল পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলে রাখার ব্যাপারে সঙ্কটে পড়ে যায়। তার জেরে গত ৩ নভেম্বর পঞ্চায়েতে অনাস্থার শুনানি হয়। সেখানে সুমিত্রাদেবী সিপিএমের পক্ষে মত দেন।
মঙ্গলবার নতুন প্রধান নির্বাচনের দিন ছিল। অশান্তি এড়াতে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল পঞ্চায়েত ভবনে। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েতের সাত সদস্যই। সভার শুরুতে প্রধান পদের জন্য নাম প্রস্তাব আকারে চাওয়া হলে সুমিত্রাদেবীই উঠে দাঁড়িয়ে মঞ্জুবালাদেবীর নাম প্রস্তাব করেন। শেষ পর্যন্ত চার জনের ভোটে তৃণমূলের মঞ্জুবালাদেবীর নামই ফের প্রধান হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এমন মত বদলের কারণ কী? সুমিত্রাদেবীর দাবি, “তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে যে হ্যান্ডবিল প্রচারিত হয়েছে, তা আমার ছিল না। অনাস্থার শুনানির সময়েও সিপিএমের চাপে পড়েই আমি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য হয়েছিলাম। এই অবস্থায় সম্প্রতি আমি হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে এলাকায় প্রচার করেছি যে আমি কখনওই তৃণমূল ছেড়ে যাইনি। ভবিষ্যতেও যাব না।” তৃণমূলের পিঁড়রা অঞ্চল সভাপতি অনুকূল চৌধুরীর অভিযোগ, “ওই সময় সিপিএম সুমিত্রাদেবীকে ভুল বুঝিয়ে এমন করেছিল। উনি নিজের ভুল পেরে ফিরে এসেছেন।”
সিপিএমের পিঁড়রা লোকাল কমিটির সম্পাদক বাউরিদাস মাহাতো অবশ্য বলেন, “এটা হয়েছে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে। তৃণমূল এখন রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। তাই সুমিত্রাদেবী হয়তো আমাদের উপরে ভরসা রাখতে পারেননি।” |