হাজারদুয়ারি লাগোয়া গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার ৪ দিন পরও রূপা মজুমদার ও তাঁর পুত্র দেবরাজের হদিস মিলল না।
গত শনিবার দুপুরে কলকাতার মাতৃমঙ্গল হাসপাতালের ম্যানেজার জয়দেব মজুমদার সপরিবার হাজারদুয়ারি বেড়াতে এসেছিলেন। ফিরে যাওয়ার সময়ে গাড়ি ওঠার ঠিক আগে গাড়িটি আচমকা নদীর ঢালু পাড় বেয়ে গড়িয়ে পড়ে গঙ্গায়। তলিয়ে যান জয়দেববাবু, তাঁর স্ত্রী ও পুত্র। জয়দেববাবুর দেহ মিললেও বাকিরা এখনও নিখোঁজ।
মঙ্গলবার অবশ্য আচমকা রটে যায় স্থানীয় এক ডোম এ দিন ভোরে গঙ্গায় একটি দেহ কুড়িয়ে পেয়েছে। বেলডাঙার কাছে ওই বালকের দেহটি তুলে নিয়ে গিয়েছে সে বলে অভিযোগ। জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আন্নাপা ই বলেন, “অভিযুক্ত ওই ডোমের খোঁজ চলেছে।”
মুর্শিদাবাদ থানা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে বেলডাঙা থানার জালালপুর খেয়াঘাট। ওই খেয়াঘাটের অপর পাড়ে রয়েছে বহরমপুর থানার হালসাহানাপাড়া খেয়াঘাট। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে বহরমপুর থানার জালালপুর গ্রাম। ওই গ্রামের শেষ প্রান্তে নদীপাড়ে রয়েছে শ্মশান। শ্মশান থেকে কিছুটা দূরে পাশাপাশি বাস করেন ৪টি ডোম পরিবার। তাঁদের এক জন হলেন মধ্যবয়সী স্বপন ডোম। জালালপুর খেয়াঘাটের মাঝি আশরাফুল শেখ বলেন, “মঙ্গলবার ভোর ৬টা নাগাদ জালালপুর থেকে ওপারে হালসাহানাপাড়ার ঘাটে ফেরি নৌকা নিয়ে যাওয়ার সময় দেখি করগেটেড টিনের তৈরি ডোঙায় করে ১৩-১৪ বছরের একটি বালকের দেহ নিয়ে ওই ডোম তার বাড়ির দিকে ছুটছে। এ কথা মঙ্গলবার রাতে আমি বেলডাঙা থানার পুলিশকে জানিয়েছি। নদী দিয়ে দেহ ভেসে গেলে স্বপনরা তা তুলে নিয়ে কঙ্কালটা বিক্রি করে। সে কথা এ তল্লাটের সবাই জানে।”
সোমবার রাতেই পুলিশ এক বার স্বপন ডোমের বাড়ি গিয়ে তাঁকে ওই মৃতদেহের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। স্বপনবাবু বলেন, “আমরা সোমবার কোনও মৃতদেহ পাইনি। সে কথা পুলিশকে জানিয়েছি।’’ স্বপন অবশ্য স্বীকার করেন, অনেক সময় নদীতে ভেসে যাওয়া বেওয়ারিশ লাশ সংগ্রহ করে তারা কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে বিক্রি করেন। |