আগুনের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব যাঁদের, সেই দমকলই পরিকাঠামোগত কারণে খোঁড়া। এমনকী, দমকল দফতরের কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করেন। অতিরিক্ত কাজের চাপ পড়ছে তাঁদের উপরে। তার উপরে নেই সামান্য উপকরণগুলোও।
কৃষ্ণনগরের দমকল বাহিনীকে সামলাতে হয় কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর ১ ও ২ ব্লক, হাঁসখালি, চাপড়া এবং কৃষ্ণগঞ্জের মতো ৭টি জনবহূল ব্লক। কোনও কোনও জায়গার দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি।
দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই বিশাল এলাকার জন্য যে যে পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা থাকা উচিত, তার প্রায় কিছুই নেই। আগুনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য ‘ফায়ার ফাইটার’ যেখানে দরকার ৩৬ জন, রয়েছেন ২৩ জন। দু’জন স্টেশন অফিসারের পরিবর্তে রয়েছেন একজন। তিন জন সাব অফিসারের থাকার কথা, একজনও নেই। ৯ জন গ্রুপলিডার থাকার কথা, আছেন চার জন। চালক প্রয়োজন অন্তত ৯ জন। রয়েছেন ৬ জন। ফলে যে ক’জন কর্মী রয়েছেন, তাঁদের সকলকেই অতিরিক্ত পরিশ্রম করে যেতে হচ্ছে দিনের পর দিন। কাউকে কাউকে একই দিনে পর পর দু’টি ‘শিফটে’ কাজ করতে হচ্ছে। খুব দরকারেও ছুটি মিলছে না।স্টেশন ডিরেক্টরকে সজাগ থাকতে হচ্ছে ২৪ ঘণ্টাই। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডেই ছুটে যেতে হচ্ছে তাঁকে।
শুধু তাই নয়। আগুন থেকে বাঁচার জন্য যে বিশেষ জামা পরতে হয়, তা নেই দমকল দফতরে। দমকল সূত্র জানাচ্ছে, অগ্নিনিরোধক জামা না থাকলে আগুন লেগে গেলে তার ভিতরে ঢুকে কাউকে উদ্ধার করা বা কিছু জিনিস বার করে আনা এক রকম অসম্ভব। এমনকী গ্যাস মাস্কই রয়েছে মাত্র চারটি। সেখানেই শেষ নয়। দমকলের এই দফতরের হাতে গাড়ির সংখ্যাও মাত্র তিনটি। একটিতে ১৮ হাজার লিটার জল ধরে। অন্য দু’টিতে ধরে সাড়ে চার হাজার লিটার করে। আর রয়েছে ৬টি জল সংগ্রহ করার পাম্প।
তবে কৃষ্ণনগর দমকলের ওসি হরলাল সরকার বলেন, “সমস্যা তুচ্ছ করে আমাদের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে যাচ্ছেন।” |