জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মঞ্চ থেকে কি শ্রীনিবাসনের বোর্ডে ভাঙন দেখা দিতে শুরু করল? অনিল কুম্বলের পদত্যাগের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে।
নতুন খবর হচ্ছে, কুম্বলের পদত্যাগেই জাতীয় অ্যাকাডেমি নিয়ে অশান্তির ঝড় না-ও থেমে থাকতে পারে। অদূর ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি পদত্যাগপত্র পৌঁছতে পারে বোর্ডের অফিসে। আর তাতে খুব উপরের দিকে থাকা নাম হচ্ছে আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার রঞ্জীব বিসওয়ালের।
সেপ্টেম্বরে বোর্ডের নির্বাচনের সময় বিসওয়াল ছিলেন সচিব পদের অন্যতম দাবীদার। শেষ পর্যন্ত ওড়িশার প্রাক্তন ক্রিকেটারকে শেষ মুহূর্তের দৌড়ে ছিটকে দেন সঞ্জয় জাগদালে। সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে বিসওয়ালকে তখন জাতীয় অ্যাকাডেমির ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু কুম্বলে যেমন চেয়ারম্যান হয়েও জানতেন না কোন অজ্ঞাত কারণে তাঁর পরামর্শ শোনা হচ্ছে না, তেমনই বোর্ডের উপর মহলের মনোভাব নিয়ে অন্ধকারে থেকে গিয়েছেন বিসওয়াল।
এ দিন শীর্ষস্থানীয় এক বোর্ড কর্তা ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “খোঁজ নিয়ে দেখুন। অনেক দিন হল রঞ্জীব বিসওয়াল এনসিএ-র মিটিংয়েও আসে না।” বোর্ড কর্তাটি ভুল বলেননি। সত্যিই বিসওয়াল জাতীয় অ্যাকাডেমির বৈঠকে যান না। আর এক বোর্ড কর্তা বললেন, “মনে হয় না ক্রিকেটারদের স্বাগত জানানোর খুব উদার মনোভাব নিয়ে এই বোর্ড চলছে বলে। দিলীপ বেঙ্গসরকরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কুম্বলে বাধ্য হয়ে সরে গেল। আরও যে দু’তিনজন আছে, তাদের দিকেও খুব সৌহার্দ্যের হাত বাড়ানো হবে, বলা যাচ্ছে না।”
ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিসওয়াল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বলে দেন, “আমি এ নিয়ে একটা কথাও বলতে চাই না। কুম্বলের পদত্যাগ নিয়েও আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই।”
বিসওয়াল মুখ খুলতে না চাইলেও কিছু কিছু ব্যাপার আর গোপন থাকছে না। যেমন, কুম্বলের পদত্যাগের পর এক বোর্ড কর্তার ফোন আসে বিসওয়ালের কাছে। আশ্চর্য জনক ভাবে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়নি ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে চেয়ারম্যান পদের অন্তর্বর্তী দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। ততক্ষণে শ্রীনিবাসনের বোর্ড ঠিকই করে ফেলেছে, মোহিন্দর পান্ডবকে অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান করা হবে। বিসওয়ালের কাছে জানতে চাওয়া হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করা যেতে পারে? বিসওয়াল নাকি সটান বলে দেন, যা করার তোমরা করো। আমাকে জিজ্ঞেস করছ কেন?
এতটা উত্তেজিত ভাবে জবাব দেওয়া থেকেই কারও কারও মনে হচ্ছে, বিতর্ক আরও দূর গড়াতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলে কারও কারও মতে, কুম্বলের মতোই পদত্যাগের রাস্তায় হাঁটতে পারেন ক্ষুব্ধ বিসওয়াল। ঘনিষ্ঠমহলে নাকি তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এখনই বিতর্ক বাড়াতে চান না। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। যদি বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর তরফে কোনও দূত সন্ধি প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসে। কিন্তু যদি সেটা না হয় তা হলে, একটা সময় আসবেই যখন তিনিও কুম্বলের মতো চিন্তা করে দেখবেন এ ভাবে থাকবেন কি না। |