সংসদে জঙ্গি হামলার দশ বছর পূর্তিতে আজ নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন সাংসদরা। কিন্তু, ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত আফজল গুরুর এখনও ফাঁসি না হওয়ার প্রতিবাদে আজকের স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না নিহতদের আত্মীয়রা। একই কারণে সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিজেপি-ও। কেন্দ্র অবশ্য চাপের মুখে আফজল গুরুর ফাঁসির দেরি হওয়ার দায় চাপিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপতির ঘাড়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংহ বলেন, “আফজল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তাই এখন সব কিছু নির্ভর করছে রাষ্ট্রপতির উপরেই। উনিই শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন।” |
সংসদে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। মঙ্গলবার। ছবি: এ এফ পি |
২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর অতর্কিতে সংসদ চত্ত্বরে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করে পাঁচ জঙ্গি। নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে পাঁচ জনেরই মৃত্যু হয়। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ৮ জন নিরাপত্তাকর্মী ও এক জন মালি। হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অপরাধে ২০০৪ সালে আফজল গুরুকে প্রাণদণ্ড দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৬ সালের ২০ অক্টোবর ফাঁসির দিন ধার্য হয়। কিন্তু তার আগেই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমার আবেদন করেন আফজলের স্ত্রী।
নিহতদের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, চাকরি পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সুবিচার পাননি। আফজল গুরুর ফাঁসি হলে তবেই কিছুটা সুবিচার মিলবে। আফজল গুরুকে এখনও ফাঁসি না দিয়ে নিহতদের অপমান করা হয়েছে বলেও বলে মনে করছেন আত্মীয়রা।
সংসদে নিহতদের স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী প্রমুখ। তাঁরা নিহতদের ছবিতে মালা দেন। নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সংসদে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
হামলার দিনে নিরাপত্তাকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে আডবাণী বলেন, “সে দিন এক জন জঙ্গিও যদি সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ত, তা হলেই মারাত্মক কাণ্ড ঘটত।” সুষমা স্বরাজ বলেন, “প্রতি বছরই দিনটিকে স্মরণ করি দুটো দিক ভেবে। নিহতদের প্রতি সম্মান জানানো এবং আফজল গুরুর ফাঁসির দাবি জানানো।” বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও কেন ফাঁসি দিতে দেরি করা হচ্ছে জানি না। আফজলকে ফাঁসি দিলে তবেই নিহতদের প্রতি সম্মান জানানো হবে।” |