মহারাষ্ট্রে পুর-নির্বাচনে বিপর্যয়ে অশনি-সংকেত বিজেপিতে।
অণ্ণা হজারের প্রভাব, কেন্দ্র ও রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে সদ্য সমাপ্ত পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও এনসিপি ভাল ফল করেছে তাতে চিন্তিত বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ দিকে নতুন বছরের গোড়াতেই উত্তরপ্রদেশ-সহ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুর এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে যদি মহারাষ্ট্রের পুর নির্বাচনে ভাল ফল করা সম্ভব হত তা হলে অনেক বেশি উজ্জীবিত হয়ে নির্বাচনে যাওয়া যেত বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
গত কাল মহারাষ্ট্রে যে ১৩২টি পুরসভার ফল প্রকাশিত হয়েছে, তাতে অর্ধেকের বেশি আসন জিতেছে কংগ্রেস ও এনসিপি। পুর-নির্বাচনে কংগ্রেস ও এনসিপি-র মধ্যে জোট না থাকায় এই নির্বাচনে ভাল ফলের আশা করেছিল বিজেপি-শিবসেনা। ফল খারাপ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে নিতিন গডকড়ীর ভূমিকা নিয়েও। নিতিন নিজে নাগপুরের বাসিন্দা। তাই মহারাষ্ট্রে এই পরাজয়ের দায় অনেকাটাই তাঁর ঘাড়ে চাপবে। বিজেপি মনে করছে, এই হারের পিছনে শিবসেনার অর্ন্তকলহ অনেকাংশেই দায়ী। শিবসেনা ও রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার ভোট কাটাকুটিতেও অনেক আসন কমেছে। আসলে মহারাষ্ট্রে এখন বাল ঠাকরের শিবসেনা না রাজ ঠাকরের এমএনএস, এই শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা বিজেপির। তারই খেসরাত পুর ভোটে দিতে হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আজ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠকে বসে বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। প্রথম তালিকায় উমা ভারতীর নাম থাকবে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপির একাংশ। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত হলে উমা-বিরোধী গোষ্ঠীর ক্ষুব্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। ইতিমধ্যেই দলে উমা-বিরোধী বলে পরিচিত বরুণ গাঁধী এ বিষয়ে নিজের আপত্তি জানিয়েছেন। তাই বিজেপির একাংশ চাইছে, ওই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীর নাম ঘোষণা থেকে বিরত থাকুক দল।
উত্তরাখণ্ডে আবার সরকার বাঁচানোর লড়াইয়ে নামছে বিজেপি। মাস কয়েক আগেই দুর্নীতির অভিযোগে রমেশ পোখরিয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে ভুবনচন্দ্র খান্ডুরিকে বসিয়েছে বিজেপি। কিন্তু তাতেও জনমানসে ক্ষোভ কমেনি। উপরন্তু যে ভাবে ওই রাজ্যে মায়াবতীর দল বসপা-র প্রভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতেও বেজায় অস্বস্তিতে অরুণ জেটলি-সুষমারা। একই অবস্থা পঞ্জাবেও। ওই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন খোদ বিজেপি নেতারাই। |