হস্তচালিত তাঁত শিল্পের উন্নয়নে দ্বিমুখী পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক দিকে ঋণগ্রস্ত এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সমবায় তাঁতকল পুনরায় খোলার জন্য তাদের ঋণ মকুব করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে হস্ততাঁত প্রযুক্তির প্রসারে জাতীয় স্তরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে শান্তিপুরে। রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্প ও বস্ত্রমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মঙ্গলবার জানান, পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সমবায় তাঁতকলের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ২১০ কোটি টাকা। বন্ধ সমবায় তাঁতকল খুলতে যা খরচ হবে, তার ৮০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র, বাকি ২০ শতাংশ দেবে রাজ্য।
আর শান্তিপুরে জাতীয় স্তরের হস্ততাঁত প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে ১০০ শতাংশ অনুদান মিলবে কেন্দ্র থেকে। পূর্ব ভারতে এমন প্রতিষ্ঠান এই প্রথম। ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হ্যান্ডলুম টেকনোলজি’ নামে ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য রাজ্যকে মোট ব্যয়ের ২০ শতাংশ বহন করতে বলেছিল কেন্দ্র। মানসবাবু বলেন, “রাজ্যের তরফে কিছু কাল আগে কেন্দ্রকে পুরো খরচই বহন করতে অনুরোধ জানানো হয়। কেন্দ্র তা মেনে নিয়েছে।” সেই সঙ্গে রাজ্যের বস্ত্র বিষয়ক প্রথম মেগাক্লাস্টারের ব্যাপারে কেন্দ্রের অনুমতিও মিলেছে। প্রস্তাবিত মেগাক্লাস্টারের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে কেন্দ্র। এর জন্য মুর্শিদাবাদে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। মানসবাবু বলেন, “সম্প্রতি রাজ্যের বিভাগীয় সচিব দিল্লি গিয়ে এই সব বিষয় চূড়ান্ত করে এসেছেন। গৃহীত হয়েছে সমুদ্রগড় ও ধনেখালিতে দু’টি ‘বস্ত্র-পার্ক’ গড়ার প্রস্তাবও।
রাজ্যের তন্তুবায়দের ব্যাঙ্কঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দু’লক্ষ টাকা করা হয়েছে বলেও জানান মানসবাবু। তিনি বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।” তন্তুবায়দের প্রত্যেককে ব্যাঙ্কের তরফে কার্ড দেওয়া হবে। দেওয়া হবে স্বাস্থ্য বিমার কার্ডও। এর সাহায্যে এক দিকে ওঁদের প্রতিটি পরিবারের ৪ জন ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। পাবেন বিকলাঙ্গ ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণও। বিভিন্ন জেলায় শিবির করে তন্তুবায়দের পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “১ জানুয়ারির আগেই রাজ্যের ছ’লক্ষ ৬৫ হাজার তন্তুবায়ের মধ্যে তিন লক্ষ ৫২ হাজার জনকে এই পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।” |