গরিব ও কৃষক বিরোধী নীতি নিয়েছে সরকার |
তৃণমূল জোট সরকার ‘গরিব-বিরোধী’ নীতি নিয়ে চলছে বলে সিপিআই মনে করে। দলের রাজ্য সম্মেলনে যে রাজনৈতিক খসড়া দলিল পেশ করা হবে, সেখানে এ কথা বলা হয়েছে। খসড়া রাজনৈতিক দলিল নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার দলের রাজ্য পরিষদের বৈঠক বসেছিল। দলিলে বলা হচ্ছে, রাজ্যে নতুন সরকার এসেছে মাত্র ৬ মাস। এর মধ্যেই রাজ্য সরকারের কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু রাজ্য সরকার যে অভিমুখে চলেছে, তা ‘গরিব-বিরোধী’। ভূমিহীন কৃষক ও গরিব মানুষের জন্য বামফ্রন্ট যে সব উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়েছিল, এই সরকার তা নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে। ২৫-২৮ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলন। সেখানেই এই দলিল পেশ করা হবে। সিপিআই মনে করছে, রাজ্য সরকার যে ভূমি-নীতি নিয়ে চলেছে, তা ভূমি-সংস্কার ও কৃষকদের ‘স্বার্থের পরিপন্থী’। বরং রাজ্য সরকারের জমি-নীতি জোতদার ও ভূস্বামীদের স্বার্থই রক্ষা করবে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন জমি-নীতি গ্রহণ করেন। জমি-নীতির রূপরেখা তৈরি করতে রাজ্যের প্রাক্তন আমলা তথা রাজ্যসভার সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেবব্রতবাবুর নেতৃত্বে যে কমিটি গঠিত হয়েছে, তার প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিপিআই মনে করছে, এই সরকার ভূমি-সংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত করতে চলেছে। যদিও ওই রিপোর্টে কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। সিপিআইয়ের ওই দলিলে রাজ্য সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি বামফ্রন্টের পরাজয়ের জন্য নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরের ঘটনাকে তুলে ধরে বলা হয়েছে, ফ্রন্ট গরিব মানুষ থেকে ‘বিছিন্ন’ হয়ে পড়েছিল। সরকারের বিভিন্ন কাজের সুফল গরিব মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছিল না। তাই মানুষ বামফ্রন্টকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
|
বোরো চাষে ঝাড়খণ্ডই জল দেবে পশ্চিমবঙ্গকে |
এ বার আর বোরো চাষে সেচের জলের সমস্যা হবে না। ঝাড়খণ্ডের জলাধার থেকে জল পাওয়া যাওয়া বলে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া সোমবার মহাকরণে জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরও সেচের জল সরবরাহের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। প্রায় প্রতি বছরেই বোরো চাষে সেচের জল নিয়ে কৃষিজীবীরা সমস্যা পড়েন। সেচের জলের দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। তা সামলাতে রাজ্য সরকারকে প্রতিবেশী রাজ্যের জলাধার থেকে জল কিনতে হয়। গত বছরও শেষ মুহূর্তে ঝাড়খণ্ডের জলাধার থেকে ছ’কোটি টাকার জল কিনে পরিস্থিতির সামাল দিতে হয়েছিল। এ বার তাই সরকার আগাম প্রস্তুতি চালিয়েছে বলে জানান সেচমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এ বার বোরো চাষের জন্য ১৮ লক্ষ ৯৯ হাজার একর জমিতে সেচের জল সরবরাহ করা হবে। তার মধ্যে ৮৮ হাজার একর জমির জন্য সেচের জল আসবে ডিভিসি-র মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে।” রবি চাষেও এক লক্ষ ২১ হাজার ৫১৩ একর জমিতে সেচের জল দেওয়া হবে। কোথায়, কী ভাবে সেচের জল বণ্টন করা হবে, তা স্থির করতে এ দিন মহাকরণে সেচ এবং জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের সচিব, বিভাগীয় অফিসার, জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী। পরে তিনি জানান, সেচের জলের সুষ্ঠু বণ্টনে এলাকায় লিফলেট বিলি করা হবে। জেলা পরিষদ সভাধিপতি, জেলাশাসক, বিডিও-দের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা সার্থক বর্মা জানান, এ বার রাজ্যে ১৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে বোরো এবং ৩৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে রবি চাষের প্রস্তুতি চলছে।
|
উচ্চ মাধ্যমিকে স্থগিত হচ্ছে না প্র্যাক্টিক্যাল |
নির্ধারিত সময়ের আগেই উচ্চ মাধ্যমিকের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিয়েছিল কাটোয়ার একটি স্কুল। তার পরেই প্রশ্ন ‘ফাঁস’-এর খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সোমবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, কোনও প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা স্থগিত হচ্ছে না। রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কাটোয়ার কোশিগ্রাম ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন স্কুলে ১ ডিসেম্বর ভূগোলের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হয়। শিক্ষা দফতরের নির্ধারিত তারিখ ছিল ৪-২০ জানুয়ারি। আগে ওই পরীক্ষা নেওয়ায় প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করে শিক্ষা দফতর। কারণ, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা স্কুল-ভিত্তিক। এর প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয় না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এ দিনের ঘটনায় প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কারণ, নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হলেও সব স্কুলে এক দিনে সব পরীক্ষা হত না। সে-ক্ষেত্রে ৬ তারিখে পরীক্ষা নেওয়া কোনও স্কুলের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ উঠতে পারত।” শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই খবর শুনে শিক্ষামন্ত্রী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরীক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরেই পরীক্ষাসূচিতে বদল হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা দফতর। কাটোয়ার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কাল, বুধবার সংসদের অফিসে ডেকেও পাঠানো হয়েছে। কী ভাবে আগে পরীক্ষা নেওয়া হল, তা জানতেই তাঁকে ডাকা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। এ দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ লায়েকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি জবাব দেননি।
|
শিল্প ধর্মঘটে সূচি বদল নয় মাধ্যমিকের |
শিল্প ধর্মঘটের জেরে মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচিতে কোনও রকম অদলবদল হচ্ছে না বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “শিল্প ধর্মঘট হলেও মাধ্যমিকের পরীক্ষা নির্ধারিত সূচি মেনেই হবে।” ২৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে শিল্প ধর্মঘট ডেকেছে ১১টি শ্রমিক সংগঠন। ওই দিন মাধ্যমিকে ইতিহাসের পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষার দিনে শিল্প ধর্মঘটের ডাকে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। সে-দিনের পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন বৈঠকে বসে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। তার পরেই পরীক্ষাসূচি অপরিবর্তিত থাকছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গেই ব্রাত্যবাবু জানান, ওই দিন যাতে অতিরিক্ত বাস চালানো হয়, সেই বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যাঁরা ধর্মঘট ডেকেছেন, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য তাঁদের অনুরোধ করব।” |