ছোট ছেলে ও দুই পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আরামবাগ মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন এক বৃদ্ধা। আরামবাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্র পল্লির বাসিন্দা বুলা দত্ত নামে বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধা সোমবার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সমীর দাসের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর ছোট ছেলে সুব্রত দত্ত, তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা এবং বড় ছেলের স্ত্রী পায়েল তাঁকে প্রায়ই মারধর করছে। খেতে দিচ্ছে না এবং বাড়ি থেকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র করছেন। ছেলে বা পুত্রবধূরা এই অভিযোগ মানেননি।
একই অভিযোগ তিনি কয়েক মাস আগে পুলিশকেও জানিয়েছিলেন। পুলিশ সেই সময়ে তাঁর বাড়িতেও যায়। কিন্তু সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ। সমীরবাবু বলেন, “পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” আরামবাগ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে কয়েক বার মীমাংসার চেষ্টা হয়েছে। পরে আর সমস্যার কথা জানাননি বুলাদেবী। নতুন করে অভিযোগও জানাননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলাদেবীর স্বামী নিরঞ্জন দত্ত বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মী ছিলেন। অবসর নেওয়ার পরে গত বছর ২৫ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। বাড়িটি বুলাদেবীর নামেই রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ছোট ছেলে এবং দুই পুত্রবধূর সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছে না। গত ২২ মার্চ তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বুলাদেবী বলেন, “পুলিশ প্রথম দিকে কয়েক বার বাড়িতে এসে ছেলে-বউমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ভয় দেখিয়ে চলে যায়। কয়েক দিন ওরা চুপচাপ ছিল। তার পরে ফের নির্যাতন শুরু করে। কয়েক দিন আগে দুই পুত্রবধূ নোড়া দিয়ে আমায় মেরেছে। ওরা বাড়িটার দখল নিতে চায়।”
সুব্রতবাবু, তাঁর স্ত্রী এবং পায়েলদেবী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সুব্রতবাবু বলেন, “মায়ের উপরে কোনও অত্যাচার করা হয়নি। মা নিজেই অশান্তি করছেন। নিজেই নিজেকে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করছেন। আমরা সামলাতে পারছি না।” মায়ের উপরে অত্যাচারের কথা মানেননি বৃদ্ধার বড় ছেলে সুপ্রিয়বাবু। তিনি বলেন, “মা কিছু দিন আগে মানসিক অসুখে ভুগছিলেন। চিকিৎসাও হয়েছিল। প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন শুনেছি। প্রশাসন তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক।” |