|
|
|
|
কৃষকদের ক্ষোভ কাজে লাগাতে পথে বামফ্রন্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কৃষকদের সমস্যাকে হাতিয়ার করে গ্রামবাংলায় হারানো জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় নামছে বামফ্রন্ট। কৃষি সংক্রান্ত একগুচ্ছ সমস্যা নিয়ে চলতি মাসেই আন্দোলনে নামছে ফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক দল এবং কৃষক সংগঠনগুলি। তার মধ্যে কিছু কর্মসূচি ‘জঙ্গি’ আন্দোলনে রূপান্তরিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
বামফ্রন্ট নেতৃত্বের মতে, রাজ্যের কৃষকদের জীবনে যে সঙ্কট এসেছে, তাকে সরকার-বিরোধী ক্ষোভের চেহারা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। পাট,আলু এবং ধান চাষিদের ফসলের দাম না-পাওয়ার সমস্যাকে কেন্দ্র করে এই জন্যই আন্দোলনের কর্মসূচি নিচ্ছেন তাঁরা। কৃষকদের এই ‘সঙ্কটে’ পাশে দাঁড়ালে দীর্ঘমেয়াদি ফল পাওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা আশাবাদী। এ রাজ্যের বাম নেতৃত্বই নন, সিপিএমের কৃষক সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতারাও পশ্চিমবঙ্গের কৃষক আন্দোলনকে এই মুহূর্তে ‘সম্ভাবনাময়’ বলে মনে করছেন। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এবং কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক কে বরদারাজন কলকাতায় এসেছিলেন। কৃষক সভার বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের বক্তব্য শুনে তাঁর মত, ‘পরিবর্তনে’র পরে এ রাজ্যে কৃষক আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অনেকের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু বাস্তবে কৃষক আন্দোলন আরও ‘সংহত’ হওয়ার পরিস্থিতি এসেছে।
কৃষি ক্ষেত্রে এই সমস্যার বিষয়টি নিয়ে রবিবার বামফ্রন্টের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “গ্রামবাংলায় প্রতিকূল পরিবেশ গড়ে উঠছে। পাট চাষিরা মার খেয়েছেন, পাট পুড়িয়ে ফেলেছেন। এখন মাঠ থেকে আলু ওঠা এবং হিমঘর থেকে আলু নামানোর সময়। কিন্তু আলু চাষিরা শেষ হয়ে যাচ্ছেন। ধানের দাম না-পেয়ে ধান চাষিরা জীবন যন্ত্রণায় শেষ হচ্ছেন। অথচ রাজ্য সরকার নির্বিকার!” ফসল বিক্রি করতে না-পেরে ৬ জন ধান চাষি আত্মহত্যা করেছেন বলে বামেদের অভিযোগ। ফসল ফলিয়েও দাম না-পাওয়ার সমস্যা এবং সারের কালোবাজারির প্রতিবাদে ডিসেম্বর জুড়ে সবক’টি শরিক দলের নিজস্ব আন্দোলন এবং কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে ফ্রন্টে। বিমানবাবুর কথায়, “বাংলায় যে পরিস্থিতি গড়ে উঠতে চলেছে, ভবিষ্যতে কী হবে বলা খুব মুশকিল!”
সিপিএমের কৃষক সভার কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ধান-আলুর বস্তা নিয়ে রাস্তায় বসে পড়া। খেতমজুরদের জন্য কাজের দাবিতে বিডিও-র দফতরে দরবার। গ্রামে-গঞ্জে হাটে-বাজারে প্রতিবাদ সভা এবং মিছিল। এই মাসেরই শেষ দিকে কৃষক ও খেতমজুরদের এক দিন কাজ বন্ধ করে ধর্মঘটে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। যাবতীয় বিষয়গুলি নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলি ১৪ ডিসেম্বর রাজ্য স্তরে যৌথ সভা করবে। বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক কৃষকদের সমস্যা নিয়েই ২০ ডিসেম্বর ধান-আলুর বস্তা নিয়ে বিডিও দফতরে ঘেরাও-বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছে। কৃষি ক্ষেত্র ধরেই হৃত জমি পুনরুদ্ধারের এই চেষ্টার পরেই শিল্প ক্ষেত্রেও নজর দিতে চায় বামেরা। মোট ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ২৮ ফেব্রুয়ারি যে ২৪ ঘণ্টার শিল্প ধর্মঘট ডেকেছে, তাকে সমর্থন জানিয়েছে বামফ্রন্ট। |
|
|
|
|
|