|
|
|
|
বিপাকে ৬২ হাজার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা |
বণ্টনের হিসেব নেই, মিলবে না অন্ত্যোদয়ের চাল |
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী • কলকাতা |
কেন্দ্রের বরাদ্দ চাল কোথায়, কী ভাবে বিলি করা হয়েছে, তার সবিস্তার হিসেব (ইউটিলাউজেশন সার্টিফিকেট) দিতে না-পারায় অন্ত্যোদয় অন্নযোজনা প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে চাল দেওয়া বন্ধ করে দিল কেন্দ্র। রাজ্য খাদ্য দফতরকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রক। এই প্রকল্পে রাজ্যের ৬২ হাজার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বিনা পয়সায় চাল পেয়ে থাকেন।
টাকা না-থাকায় বিপিএল মানুষদের জন্য চালের বাড়তি বরাদ্দ রাজ্য সরকার পুরোটা তুলতে পারেনি। তাই বিপিএলদের সস্তার চালে টান পড়ার প্রভূত আশঙ্কা। তার উপরে এ বার অন্ত্যোদয় অন্নযোজনায় কেন্দ্র চাল সরবরাহ বন্ধ করায় সমস্যা আরও বাড়ল। অন্ত্যোদয় প্রকল্পে পঁয়ষট্টির বেশি বয়সী দরিদ্রতম মানুষদের বিনামূল্যে মাসে ১০ কিলোগ্রাম করে চাল-গম জোগায় করে রাজ্য সরকার। আর এই খাতে রাজ্যকে তিন মাস পর পর খাদ্যশস্য সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “কেন্দ্র এই প্রকল্পে শেষ বার চাল পাঠিয়েছে গত মে মাসে। তার পরে আর চাল আসেনি।”
কেন আসেনি, তার ব্যাখ্যা রয়েছে দিল্লির চিঠিতেই। কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ দফতরের উপসচিব ১৭ নভেম্বর রাজ্যের খাদ্য কমিশনারকে লেখা সেই চিঠিতে বলেছেন, “অন্ত্যোদয় অন্নযোজনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধের বরাদ্দ চাল রাজ্যকে সরবরাহ করা হয়েছিল। ধরে নেওয়া হয়েছিল, বিগত অর্থবর্ষের (২০১০-১১) ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট যথাসময়ে পাওয়া যাবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেই সার্টিফিকেট এখনও কেন্দ্রের কাছে পৌঁছায়নি।”
এবং এরই প্রেক্ষিতে অন্ত্যোদয় অন্নযোজনায় দ্বিতীয়ার্ধের চাল পশ্চিমবঙ্গকে সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় উপ-সচিব। ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি কেন? এর দায় পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট সরকারের উপরে চাপিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় চাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় রেশন ডিলারেরা ক্ষোভের মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের রেশন ডিলার সংগঠন ‘জয়েন্ট ফোরাম ফর পিডিএস ডিলার্স অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। তিনি বলেন, “অন্ত্যোদয় অন্নযোজনায় মাসিক বরাদ্দের চাল রেশন ডিলারেরা কোনও কমিশন ছাড়াই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়িতে পৌঁছে দেন। গত ছ’মাস তা না-পাওয়ায় মানুষ ডিলারদের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন।” রাজ্য কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা ভাবছে? খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে খাদ্য কমিশনার কেন্দ্রীয় খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা কিছুটা চাল পাঠাতে রাজি হয়েছে। আপাতত এ ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।” মন্ত্রীর দাবি, “অন্ত্যোদয় যোজনায় পশ্চিমবঙ্গে এখন ৬২ হাজার মানুষ চাল পান। তবে রাজ্যের কোটা ৭৬ হাজারের কিছু বেশি। ব্যাপারটা কেন্দ্রের নজরে এনেছি।’ |
|
|
|
|
|