ওডিশার এক সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার খয়রামারি গ্রাম থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের নাম আইনাল বারি ও জাহাঙ্গির শেখ। গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যেয় ওড়িশার জনবহুল এলাকা জাজপুর রোডের একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করে ১৭ জনের একটি দল। ওই ঘটনার তদন্তে ওডিশা থেকে ১৩ জনের একটি পুলিশ দল মুর্শিদাবাদে এসেছিল। লালবাগ সিজেএম আদালতে রবিবার হাজির করানো হলে ধৃতদের ‘ট্রানজিট রিম্যান্ড’-এ নিয়েছে ওডিশা পুলিশ। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার (মুর্শিদাবাদ, লালবাগ) বলেন, “ওই ডাকাত দলে ছিল ১৭ জন। তার মধ্যে ১৪ জন মুর্শিদাবাদের আর বাকি তিন জনের বাড়ি বর্ধমান। ওই ঘটনার তদন্তে ওডিশা পুলিশের একটি দল গত ২৬ নভেম্বর বহরমপুরে এসে পৌঁছায়। শনিবার রাতে ওডিশা পুলিশ, মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন স্কোয়াড ও জলঙ্গি থানার পুলিশ এক যোগে তল্লাশি চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাজপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি করে পালানোর সময় দুষ্কৃতীরা একটি ব্যাগ ফেলে যায়। ওই ব্যাগ থেকে মেলে একটি মোবাইল। ওই মোবাইলের সূত্র ধরেই জানা যায়, ডাকাত দলের অধিকাংশই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। সেই সঙ্গে ক্লোজ সার্কিট টিভি থেকে ডাকাতদের চেহারারও ছবি পাওয়া যায়। এর পরেই জাজপুর পুলিশ প্রশাসনের তরফে গোটা বিষয়টি মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। সেই মতো মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ প্রশাসনের স্পেশাল অপারেশন স্কোয়াড ও ডোমকল মহকুমা পুলিশ প্রশাসন এক সঙ্গে তল্লাশি শুরু করে। গত ২৬ নভেম্বর তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ওডিশা থেকে আসা ১৩ জনের একটি পুলিশ দল। যার নেতৃত্বে রয়েছেন জক্রপুরা থানার আইসি ভবানিশঙ্কর মিশ্র। তিনি বলেন, “আড়াই মিনিটের মধ্যে ওই দোকানে ডাকাতি করে ডাকাত দল বোমা ফাটাতে ফাটাতে এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছিল। তারা একটি ব্যাগ ফেলে পালায়।”
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুষ্কৃতীরা প্রথমে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোটেলে জড়ো হয়েছিল। তারপর ট্রেনে জাজপুরে পৌঁছয় ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায়। সেই সন্ধ্যাতেই কয়েক মিনিটের মধ্যে সোনার দোকানে ডাকাতি করে হাওড়াগামী ট্রেনে চড়ে বসে। হাওড়া থেকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে চড়ে তারা নামে পলাশি স্টেশনে। পলাশি থেকে গাড়িতে করে তারা নিজের এলাকায় ফিরে যায়। মৃণালবাবু বলেন, “১৭ জনকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় ওডিশার কেউ জড়িত আছে কি না তা এখনও জানা যায়নি। ওই ডাকাতির মূল পাণ্ডার খোঁজ চলছে।” |