১০০ দিনের কাজে ‘পিছিয়ে’ জেলার ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত
কশো দিনের প্রকল্পে কাজের গতি থমকে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এর মধ্যে ৪টি পঞ্চায়েতে একটি শ্রমদিবসও তৈরি হয়নি চলতি বছরে! বলবাহুল্য পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে অধিকাংশই জঙ্গলমহল এলাকায়।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুফল পৌঁছে দিতে মরীয়া রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় একশো দিনের প্রকল্পের হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। ১ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিওদের চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “কয়েকটি এলাকায় অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার জন্যই এই পরিস্থিতি। তবে, এখন স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। পর্যালোচনা বৈঠক হচ্ছে।”
গ্রামের গরিব মানুষের হাতে দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার অর্থ পৌঁছে দিতেই একশো দিনের কাজ প্রকল্পের ভাবনা। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, গরিব মানুষ বছরে অন্তত একশো দিন কাজ করুক। তাঁদের কাছে সেই সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হোক। এ জন্য নির্দেশিকাও রয়েছে। কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় এই প্রকল্পের হাল এ বার শোচনীয়। গত বছরের থেকে পরিস্থিতি এ বার খারাপ। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে ১২৭ কোটি ৮৬ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে খরচ হয়েছে ৮৮ কোটি ৬২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। মোট জব কার্ড ইস্যু হয়েছে ৮ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৫৫। আর মানুষ গড়ে কাজ পেয়েছেন মাত্র ১৮ দিন।
একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে ‘পিছিয়ে পড়া’ বলে যে ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত চিহ্ণিত হয়েছে, তার অধিকাংশই ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রামের মতো জঙ্গলমহল এলাকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঝাড়গ্রামের আগুইবনি, নয়াগ্রামের পাতিনা ও বড়খাকড়ি এবং সাঁকরাইলের ধানঘোরিএই ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করেও শ্রমদিবস তৈরি হয়নি! অর্থাৎ পঞ্চায়েতের এক জনকেও এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে অচলাবস্থার জন্যই এই পরিস্থিতি বলে মনে করছে প্রশাসন। তবে, অনেক পঞ্চায়েতে স্রেফ উদ্যোগ ও তদারকির অভাবেও কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, “গত ক’মাস ধরে জেলার বেশ কিছু পঞ্চায়েত কার্যত অচল হয়ে গিয়েছিল। কোথাও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষরা আসতেন না। কোথাও আবার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা পঞ্চায়েতের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতেন। তার ফলেই আজ এই পরিস্থিতি।” ওই সূত্রই জানাচ্ছে, চলতি আর্থিক বছরে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি গ্রাম পঞ্চায়েতে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ১০৯টি, পাটাশিমূলে ১৮০, গোপীবল্লভপুর-২ এর তপসিয়ায় ৩৬৩। যে ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের গতি কম, সেগুলির সবেতেই দু’হাজারের কম শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে এই সময়ের মধ্যে। শুধু জঙ্গলমহল এলাকারই নয়, এই তালিকায় নাম রয়েছে ডেবরা, দাসপুর-১, পিংলা, ঘাটাল, এমনকী মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকার কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতেরও। ডেবরার ভবানীপুরে ১০১৫, ঘাটালের সুলতানপুরে ৯১৮, মেদিনীপুর সদরের পাঁচখুরি-১ এ ১১১৭ শ্রমদিবস তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “একাংশ পঞ্চায়েতে কাজ করার পরিবেশই নেই। বিষয়টি আগেই প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল।” এই প্রেক্ষিতে ‘দুর্বল’ পঞ্চায়েতগুলিতে কাজের গতি আনার ক্ষেত্রে সর্বস্তরে সমন্বয় বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “আগের থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। পরস্পরকে সহযোগিতা করে সমন্বয় বাড়াতে বলা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.