তালা পড়ল তৃণমূল কার্যালয়েও
গড়বেতা-কেশপুরে গণ্ডগোল চলছেই
ড়বেতা-কেশপুরে অশান্তি চলছেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে প্রতিদিনই কোনও না কোনও এলাকায় গণ্ডগোল হচ্ছে। শনিবার কেশপুরের পঞ্চমীতে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে ধৃত এক তৃণমূলকর্মীকে ছাড়িয়ে নেয় দলেরই এক গোষ্ঠী। আবার গড়বেতার আউসাবাঁধিতে তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কে বা কারা। শনিবারই রাতের অন্ধকারেই তালা পড়েছে গড়বেতা শহরে তৃণমূলের দু’টিপার্টি অফিসে! একের পর এক ঘটনায় দিশেহারা জেলা নেতৃত্ব কী করণীয় ভেবে পাচ্ছেন না। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “নতুন দলে আসা গুটিকয় কর্মী-সমর্থক অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। আমরা তাঁদের চিহ্নিত করে শোধরানোর চেষ্টা করছি। ব্লক ধরে-ধরে বৈঠক করারও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, শীঘ্রই সমস্যা সমাধান হবে।”
শনিবার রাতে গড়বেতা শহরে তৃণমূলের দু’টি অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। তারই সঙ্গে পার্টি অফিসের দেওয়ালে পোস্টারও সাঁটায়। তাতে লেখা ছিল, ‘গড়বেতায় বিজয়ী নেতা সুশান্ত ঘোষ। পঞ্চায়েতগুলো সিপিএমের দখলে। অতএব তৃণমূলের পার্টি অফিস চলতে পারে না। এই জন্য তালা ঝোলানো হল।’ রবিবার সকালে প্রতি দিনের মতো অফিস খুলতে গিয়ে তৃণমূলকর্মী দিলীপ পাল তা দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নেতাদের ফোনে বিষয়টি জানান। তৃণমূল সূত্রে অবশ্য খবর, দলেরই কয়েকজন এই কাজ করে গড়বেতায় বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও গড়বেতার তৃণমূল নেতা বিজয় ঘোষ বলেন, “কারা এই কাজ করেছে তা তো দেখিনি। তবে যারাই এই কাজ করে থাকুক তা ঘৃন্য। আমরা এই ধরনের কাজের তীব্র প্রতিবাদ করছি। যদি কেউ এমন কথা কেউ বলতেই চান, তিনি দিনের আলোয় সরাসরি আমাদের জানান। রাতের অন্ধকারে এরকম করা কাপুরুষের কাজ।”
নিজস্ব চিত্র।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়বেতায় উত্তেজনা ছড়ায় রবিবার সকালে। পরে তালা ভেঙে দলীয় নেতা-কর্মীরা পার্টি অফিসে ঢোকেন। গড়বেতার এক সিপিএম নেতার কথায়, “এখন তো সব নেতাই ঘরছাড়া। যে কয়েকজন রয়েছেন তাঁরাও চুপচাপ। এমনকী তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলি চলছে। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের কেউই এই কাজ করতে পারে না।” মূলত, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দলেরই এক গোষ্ঠী এই কাজ করেছে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশও।
আবার সেই রাতেই কে বা কারা গড়বেতার আউসাবাধি গ্রামের নুর নবি মণ্ডলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই গড়বেতা থানার ওসি শৈলেন বিশ্বাসের নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে পুলিশবাহিনী পৌঁছয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় লোক এসে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও রবিবার নবি মণ্ডল থানায় অভিযোগ করেন, ১০-১২ জন লোক তাঁর বাড়িতে লুঠপাট চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাঁরা তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর সমর্থক। অন্য দিকে গণ্ডগোলের ঘটনায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবার কেশপুরের পঞ্চমীতে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে তৃণমূলের কিছু লোক। পঞ্চমীতেই কিছুদিন আগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর জোর সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। বাড়ি পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূলকর্মী শেখ সালালকে শনিবার পুলিশ ধরে। তারপরই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী সালালকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে পথ অবরোধ করে। অবশেষে পুলিশ সালালকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তারপরই পথ অবরোধ ওঠে। প্রকাশ্যে ধৃতকে ছেড়ে দেওয়ার কথা স্বীকার না করলেও পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “মগরাহাটে পুলিশ সক্রিয় হওয়ায় কী ঘটনাই না ঘটল। এখানেও অবরোধ তুলতে গেলে লাঠি চালাতে হতই। লাঠি চালালে আবার জনতা উত্তেজিত হয়ে বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা বাড়ত। এই পরিস্থিতিতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।” আর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আশিস প্রামাণিক বলেন, “পুলিশের কাজে আমরা বাধা দিইনি। পুলিশ তার কাজ করবে। কেন পুলিশ এমন করল আমিও জানি না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.