কাল মোতেরায় বীরেন্দ্র সহবাগ অ্যান্ড কোম্পানির সিরিজ জিতে নেওয়ার যুদ্ধ। কাল ৩-০ হয়ে যাওয়া মানে শেষ দুটো ম্যাচ হবে নিয়মরক্ষার, দেখে নেওয়া যাবে জুনিয়রদের। অর্থাৎ তাঁরা সুযোগ পাবেন যাঁরা প্রথম তিন ম্যাচে মাঠের বাইরে থেকেছেন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও। মোতেরায় জিতলে ইন্দৌর বা চেন্নাইয়ে বাকি দুটো ম্যাচে মনোজের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে। মোতেরায় কালই তৃতীয় ওয়ান ডে-র দল নির্বাচন। আরও গুরুত্বপূর্ণ, কালই ঠিক হবে আহত প্রবীণ কুমারের জায়গায় অস্ট্রেলিয়া সফরে কে যাবেন। দৌড়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে কর্নাটকের অভিমন্যু মিঠুন।
ম্যাচের কথা বললে স্বভাবতই ৩-০-র লক্ষ্যে কাল মোতেরায় নামছে ভারত। সহবাগরা নিশ্চয়ই চাইবেন শেষ দুটো ওয়ান ডে-র আগেই ক্যারিবিয়ান বধ সাঙ্গ করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া সফরের ভাবনায় ঢুকে পড়তে। এই সিরিজ নিয়ে যে রথী-মহারথীদের তত মাথাব্যথা নেই তা ম্যাচের আগের দিন প্রচারমাধ্যমের সামনে উমেশ যাদবকে পাঠানো থেকেই পরিষ্কার। যিনি ম্যাচের আগের দিন গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানাচ্ছেন, এক দিন গ্লেন ম্যাকগ্রা হয়ে উঠতে চান। “ম্যাকগ্রা আমার হিরো, আমার অনুপ্রেরণা। ওর মতো বল করার চেষ্টা করছি।” বিশাখাপত্তনম ম্যাচের পর ছোটখাটো বিশ্রাম নিয়েছিলেন সহবাগ-সহ আরও পাঁচ জন রোহিত শর্মা, অজিঙ্ক রাহানে, গৌতম গম্ভীর, বিরাট কোহলি এবং বরুণ অ্যারন। এঁরা আমদাবাদ পৌঁছলেন রবিবার সন্ধেয়। |
ভারতের নতুন পেসার-জুটি উমেশ যাদব ও বিনয় কুমার। মোতেরাতেই কি সিরিজের ফয়সালা করবেন? |
এ রকম ফুরফুরে পরিবেশের মধ্যে ভারতের দুশ্চিন্তা বলতে ওপেনিং জুটি। প্রশ্ন উঠেছে, বীরুর সঙ্গে পার্থিব পটেলের ফর্ম নিয়ে। প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যর্থতার পর মোতেরায় ঘরের মাঠে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সম্ভবত শেষ সুযোগ পেতে চলেছেন পার্থিব। এখানেও রান না পাওয়া মানে ওয়ান ডে টিম থেকে ছিটকে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে সহবাগ-গম্ভীরের ছন্দে না থাকা যদি খচখচানির কারণ হয়, তা হলে স্বস্তির অক্সিজেন বলতে দুই তরুণের দাপুটে ফর্ম। সন্দেহ নেই, মিডল অর্ডারে বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মার উপস্থিতি যেন এক ঝলক টাটকা বাতাস। আগের ম্যাচেই বিরাট সেঞ্চুরি করেছেন, আর ম্যাচ জিতিয়ে অপরাজিত ৯০ করে ফিরেছেন প্রতিভাবান রোহিত। রেকর্ড-বই বলছে, ঘরের মাঠে এই নিয়ে টানা এগারোটা ম্যাচ জিতেছে ভারত। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি বলেছেন, “ঘরের মাঠে ওদের রেকর্ড অসম্ভব ভাল। মনে রাখবেন ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আমাদের সামনে এখন সিরিজটা বাঁচানোর লড়াই।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের সমস্যা হচ্ছে, প্রতি ম্যাচেই মিডল অর্ডার চূড়ান্ত ব্যর্থ। বিগ হিটার বলে যে সুনাম কায়রন পোলার্ডের আছে, তা আইপিএলে প্রযোজ্য হলেও এই সিরিজে এখনও টিমের কাজে লাগেনি। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, বোলিং ভাল হলেও ব্যাটিংটা একা টানতে হচ্ছে ড্যারেন ব্র্যাভোকে। ব্র্যাভো খেললে তবে টিম রান পাচ্ছে। গত ম্যাচে টেলএন্ডার রবি রামপলের ৬৬ বলে ৮৬ নট আউট আসলে ব্যতিক্রম, যা নিয়মকেই প্রমাণ করে। যা দেখে ক্যারিবিয়ান কোচ ওটিস গিবসনও বলছেন, “ভাবনাচিন্তা এবং প্রয়োগক্ষমতার অভাবে আমাদের ব্যাটিং ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা চাইছি ব্যাটসম্যানরা আরও বেশি দায়িত্ব নিক। ভাল করে ম্যাচের পরিস্থিতিটা বুঝুক। শেষ ম্যাচে কোহলি আর রায়না যে রকম করল, সে ভাবে পরিকল্পনামাফিক খেলতে হবে আমাদেরও।”
তারকাহীন সিরিজে প্রথম দুটো ম্যাচ অর্থাৎ কটক ও বিশাখাপত্তনমে কিন্তু মাঠ ভরে গিয়েছিল। বোর্ড কেন ছোট কেন্দ্রে ম্যাচ ফেলছে না, তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। মোতেরায় ম্যাচ আবার সোমবার। যা নিয়ে সংগঠকদের বক্তব্য, শনি বা রবিবার ম্যাচ করা উচিত ছিল। মোতেরায় কাল মাঠ ভরবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। তবে মাঠ ভরুক বা না ভরুক, মোতেরাতেই সিরিজ পকেটে পুরতে চাইবেন সহবাগরা। |