পাথর শিল্পাঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পাথর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে বৈঠক করে বন্ধের ডাক গিয়েছিল আদিবাসী গাঁওতা। সেই বৈঠক থেকে ফেরার পথে গাঁওতার সদস্যেরা পাথর ব্যবসায়ী ও কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পাথর শিল্পাঞ্চল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। রবিবার রামপুরহাটের ঘটনা। এ দিন সন্ধ্যায় সমিতির পক্ষ থেকে রামপুরহাট থানায় আদিবাসী গাঁওতার বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রামপুরহাটের বারমেসিয়া, বড়পাহাড়ি ও দিঘলপাহাড়ি- এই তিনটি এলাকার পাথর খাদান ও ক্রাসার আজ সোমবার থেকে বন্ধ রাখা হবে বলে পাথর শিল্প মালিক সমিতি জানিয়েছে।
ওই তিনটি এলাকার পাথর শিল্পাঞ্চলে ধুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য পাথর ব্যবসায়ী ও আদিবাসী গাঁওতা নেতৃত্বকে নিয়ে রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন বৈঠক করে। ধুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা বয় ব্যবসায়ীদের।
আদিবাসী গাঁওতার অভিযোগ, এক মাস পেরিয়ে গেলেও ব্যবসায়ীরা ঘুলো নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আদিবাসী গাঁওতা’র নেতা রবিন সোরেন এ দিন দুপুরে স্থানীয় তুম্বনিতে সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। রবিনবাবু অভিযোগ করেন, “এক মাস পেরিয়ে গেলেও মালিকপক্ষ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকদের পরিচয় পত্র প্রদান, মহিলা শ্রমিকদের জন্য পৃথক শৌচালয় নির্মাণ-সহ অন্যান্য দাবিপূরণ নিয়ে কোনও রকম উদ্যোগ নেয়নি।” একই সঙ্গে প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ, “খাদান ও ক্রাশারগুলির কাগজপত্র প্রশাসনের যাচাই করার কথা ছিল। তাও হয়নি। এর প্রতিবাদেই তাঁরা আগামী কাল মঙ্গলবার, থেকে রামপুরহাট থানা এলাকায় পাথর শিল্পে বন্ধের ডাক দেন। রবিন সোরেন জানান, আজ সোমবার তাঁরা জেলা প্রশাসনের কাছে সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
কিন্তু সন্ধ্যার পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। মালিক পক্ষের তরফে মিলন শেখ, এহেশান আলি, পনি বিশ্বাসরা থানায় অভিযোগ করেন, গাঁওতার সদস্যেরা বৈঠক সেরে ফেরার পথে ধরমপাহাড়ি, বারমেসিয়া, দিঘলপাহাড়িতে কয়েকটি ক্রাসারের মালিক ও কর্মীদের মারধর করে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবিও তোলেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত ওই তিনটি এলাকার পাথর খাদান ও ক্রাশারগুলি বন্ধ রাখা হবে বলেও তাঁরা জানান। গাঁওতার তরফে রবিনবাবুর পাল্টা দাবি, “আমাদের সদস্যেরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করে ফিরেছেন। মালিকপক্ষ দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।” মহকুমাশাসক (রামপুরহাট) বৈভব শ্রীবাস্তব বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পদ্ধতিগত কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন ক্রাসার মালিক তাঁদের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। সে সব পরীক্ষা করা হচ্ছে। আদিবাসী গাঁওতার কোনও অভিযোগ থাকলে আমাদের জানাক। আমরা ব্যবস্থা নেব।” পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। |