করলা নদী বাঁচাতে অভিযান পুরসভার
হরের সব নর্দমারই গতিমুখ করলা নদীতে। তাই সারা বছরই দূষণে আক্রান্ত থাকে জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া এই নদী। গত সপ্তাহে কয়েক হাজার মাছের মড়কে নাব্যতা হারিয়ে মজে যাওয়া এই নদীটিকে নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। নদীতে সমীক্ষা চালিয়ে উঠে আসছে একের পর তথ্য। দূষণে জেরবার এই নদীর জলে সারা বছরই অক্সিজেনের পরিমাণ থাকে প্রয়োজনের অত্যন্ত কম। তবে মাছের বেঁচে থাকার মতো অক্সিজেনের মাত্রা থাকলেও জলে দূষণ বেড়ে যাওয়ায় নদীতে এমনিতেই মাছের মৃত্যুর হার তুলনামুলক ভাবে বেশি বলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের ছোট বড় সব ধরনের নর্দমাই সরাসরি করলা নদীতে এসে মিশেছে। শহরের দিনবাজার এলাকার বেশ কিছু বাড়ির নিকাশি নালাও সরাসরি নদীতে যুক্ত করা রয়েছে। পুরসভার অভিযোগ, জেলা প্রশাসন-সহ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে দীর্ঘদিন ধরেই রিপোর্ট পাঠানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নর্দমার জল সরাসরি নদীতে পড়ায় এমনিতেই নদীর জলে বিষক্রিয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়ে যায় বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত। এদিকে রবিবার করলা নদীর গর্ভে পলি সরানোর কাজ শুরু করেছে পুরসভা। নদীর জল প্রবাহে বাধা হয়ে থাকা ঝোপজঙ্গলও কেটে ফেলা হচ্ছে।
দূষণমুক্ত করতে করলা থেকে তোলা হচ্ছে মাটি । জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
এদিন সকাল থেকে দিনবাজার এলাকায় করলা নদীতে জেসিবি মেশিন নামিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু কাজের তদারকি করেন। তিনি বলেন, “পুরসভা নিজের সাধ্যমতো কাজ শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ কিছুই করা হচ্ছে না। কিছু পরিমাণ তিস্তার জল করলায় দুদিন ধরে ফেলা ছাড়া করলায় আর কোনও কাজ প্রশাসনের তরফে হয়নি। তার ফলে মূল সমস্যা সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে।” করলা নদীর দূষণের জন্য সরকারকেই দায়ী করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বছর পাঁচেক আগে পুরসভার থেকে শহরের নিকাশি নিয়ে একটি পরিকল্পনা রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়। সেই পরিকল্পনায় করলা নদীতে কোনও নর্দমার জল সরাসরি ফেলা হবে না বলে জানানো হয়। সব নর্দমাগুলির সংযুক্তি ঘটিয়ে নর্দমার জল মাটির নীচে পাইপ দিয়ে এনে শোধন করা হবে। সেই জল পুনরায় ব্যবহার করা হবে এবং কিছুটা ফের করলায় ফেলা হবে। পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “এই পরিকল্পনার রূপায়ন ঘটালে নদীর স্বাস্থ্য ভাল থাকত। আগে কেউই নদীর কথা ভাবল না। মাছের মড়ক শুরু হওয়ার পরে সকলের টনক করেছে। তবু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।” গত সোমবার করলা নদীতে মাছের মড়কের ঘটনার পরে পুরসভার মাসিক বৈঠকে নদী সংক্রান্ত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “নদীর জলে যে কোনও ধরনের আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ করা হবে। বিভিন্ন বাড়ি থেকে সরাসরি পাইপের সাহায্যে দূষিত জল করলায় ফেলা হয়। তাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.