নদী বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছিল জঙ্গিপুর পুরসভা। এমনকী পুজোর পরে প্রতিমার পচা খড় কিংবা কাঠামো দূষণ রুখতে নদী থেকে তুলে নেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল পুরসভা। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতনতা না ফিরলে কে বাঁচাবে সেই নদীকে?
জঙ্গিপুরের যাবতীয় আবর্জনা দিনান্তে তাই পুরসভার নির্ধারিত ডাম্পিং গ্রাউন্ড বা ধাপায় না পড়ে জমছে ভাগীরথীর কোলে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী। নদী পাড় ক্রমশই ছোট হয়ে আসছে।
সরকারি আইনজীবী অশোক সাহা বলেন, “গঙ্গার দূষণ রোধে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। এ ভাবে নদীতে আবর্জনা ফেলা বড় অপরাধ। সব জেনেও নিরব জঙ্গিপুর পুরসভা।” স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল শেখ বলেন, “নদীর পাড়ে আবর্জনা পড়ে থাকায় দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়ছে মশার উপদ্রবও। ওই ঘাটে গিয়ে আগে অনেকেই স্নান করতেন। এখন আবর্জনার ঠেলায় সে সব বন্ধ। পাশাপাশি, শহরের সমস্থ নর্দমার জলও গিয়ে পড়ছে নদীতেই। বার বার কাউন্সিলরদের জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” |
নদীর পাড়ে জমছে আবর্জনা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়। |
জঙ্গিপুরের কংগ্রেস কাউন্সিলর বিকাশ নন্দ বলেন, “পুরসভায়ও এ বাপারে বার বার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। জঙ্গিপুরের সমস্থ নর্দমার জল গিয়ে পড়ে নদীতে। নর্দমা বন্ধ করে বিকল্প ব্যবস্থা করার আশ্বাস মিলেছিল। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই নদীর জলই শোধন করে পানীয় জল হিসাবে শহরে সরবরাহ করা হয়।”
জঙ্গিপুর পুরসভার উপপ্রধান অশোক সাহা বলেন, “নদীতে আবর্জনা ফেলার প্রশ্নই নেই। জঙ্গিপুর শহরের আবর্জনা নিয়ে এসে রঘুনাথগঞ্জের নির্দিষ্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলার কথা। যদি আবর্জনা নদীতে ফেলা হয়, তবে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত নর্দমাটি কী অবস্থায় রয়েছে তা দেখে বিকল্প ব্যবস্থা নেবে পুরসভা। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অশোক সাহা বলেন, “জায়গাটা দেখেছি। যাতে ওই ঘাটে আর নোংরা ফেলা না হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের নির্দিষ্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ড আছে। সেই জায়গা ভরে গেলে বিকল্প জায়গায় নোংরা ফেলার বন্দবস্তও করা হবে। শহরের আবর্জনা থেকে সার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করার জন্য আমাদের পুরসভার কর্মীরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে এত কম আবর্জনা থেকে সার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।” |