আবর্জনার স্তূপে ভরাট ‘নয়ানজুলি’
রিবেশ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নয়ানজুলিতে আবর্জনা ফেলছে পঞ্চায়েত। ফলে এলাকায় বাড়ছে দূষণ। বর্জ্য জমে প্রায় ভরাট নয়ানজুলিটিও।
দীর্ঘদিন ধরেই বালির দু’টি পঞ্চায়েত এমন বেআইনি কাজ করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের কথায়, বালির দু’নম্বর জাতীয় সড়কের পাশের ওই নয়ানজুলিতে আবর্জনা ফেলে সেটিকে কার্যত ভাগাড়ে পরিণত করেছে বালি দুর্গাপুর-অভয়নগর ১ এবং দুর্গাপুর-অভয়নগর ২, এই দু’টি পঞ্চায়েত। ওই দুই পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষেরই অবশ্য দাবি, আবর্জনা ফেলার জন্য সুনির্দিষ্ট জায়গা মেলেনি। তাই বেআইনি জেনেও সেখানে আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে বালি জগাছা ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চৈতালী দেবনাথ বলেন, “দুর্গাপুর-অভয়নগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের রেকর্ড অনুযায়ী ওই জায়গাটি একটি নয়ানজুলি। বিকল্প জায়গার সমস্যা থাকায় বাধ্য হয়েই সেখানে আবর্জনা ফেলতে হচ্ছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালুর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু জমির অভাবে তা হয়নি। আবার কয়েক কিলোমিটার দূরে বালি পুরসভার ভাগাড়ে ওই দু’টি পঞ্চায়েতের আবর্জনা নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়।”
এ ভাবেই ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ছবি: রণজিৎ নন্দী
পরিবেশ দফতরের মুখ্য উপদেষ্টা তথা নদী ও জলাভূমি বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, “এটা করা অনুচিত। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প এখনও সে ভাবে চালু করা যায়নি বলেই সমস্যা হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে একটা ‘কমন ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ দরকার। তবে নয়ানজুলি বুজে গেলে পুরো এলাকা বানভাসি হয়ে যাবে।” নয়ানজুলি বুজে গেলে বিপদের আশঙ্কা আছে বলে মনে করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও। তিনি বলেন, “নয়ানজুলি বা ওই ধরনের জলাশয়ে কখনওই আবর্জনা ফেলে বোজানো যায় না। এগুলি দিয়ে বিভিন্ন এলাকার বৃষ্টির জলও যায়। এ ছাড়া জলের সঙ্গে বর্জ্য মিশে দূষণ বাড়তে পারে। অন্য কোথাও ফেলার থেকে নয়ানজুলিতে আবর্জনা ফেলা বেশি বিপজ্জনক।”
বালি হল্ট থেকে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ডানকুনির দিকে এগোলেই চোখে পড়ে বেনিয়মের ছবিটা। নিবেদিতা সেতু টোল প্লাজার উল্টো দিকে টোল-ফ্রি রাস্তায় সাহেববাগান বাসস্টপ। পাশ দিয়ে একটি রাস্তা যাচ্ছে দুর্গাপুর-অভয়নগর ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে। ওই রাস্তার ধরে যে নয়ানজুলি রয়েছে, সেটিই কার্যত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির সময়ে রাস্তা উঁচু করার জন্য যে সব জমি থেকে মাটি কাটা হয়, সেগুলিই নয়ানজুলিতে পরিণত হয়েছে। দুর্গাপুর-অভয়নগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার এ রকম একটি নয়ানজুলিতেই আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, আবর্জনা পচে দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকাতে। স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি বেআইনি। দু’টি পঞ্চায়েতের সঙ্গেই কথা বলেছি। ওঁরা বিকল্প জায়গা না থাকার কারণ দেখাচ্ছেন। মনে হয় এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে। নয়ানজুলি বুজে গেলে কারও স্বার্থসিদ্ধি হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.