পারসনাথের ঠান্ডা হাওয়া ছড়িয়ে দেয় দুনের আগুন, দাবি কর্তাদের
কী করে আগুন লেগেছিল তা এখনও নিশ্চিত হতে না পারলেও দেরাদুনমুখী দুন এক্সপ্রেসে আগুন কী করে এত তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ল, সে সম্পর্কে অনেকটাই নিশ্চিত হতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
গত ২১ নভেম্বর বেশি রাতে ঝাড়খণ্ডের পারসনাথ ও নিমিয়াঘাট স্টেশনের মাঝে দুন এক্সপ্রেসে আগুন ধরে যাওয়ার পর চালক খবর পেয়ে অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই ট্রেনটি থামিয়ে দিয়েছিলেন। তার পরে অগ্নিদগ্ধ কামরা দুটি ছাড়া অন্য কামরা থেকেও প্রচুর যাত্রী ট্রেন থেকে লাফিয়ে নীচে নেমে পড়েন। পাহাড় ঘেরা ওই অঞ্চলে সে রাতে বেশ জোরেই ঠান্ডা হাওয়া বইছিল। ট্রেনটির বি-ওয়ান ও বি-টু বাতানুকূল কামরা থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া বের হতে দেখে এবং ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার শুনে যাত্রীরা ওই দুই কামরার জানলা লক্ষ করে ঢিল মারতে শুরু করেন। তাতে বেশির ভাগ জানলার কাচই ভেঙে যায়। আর তার ফলেই প্রচণ্ড হাওয়ায় কামরার ভিতরের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। জানলা ও কেবিনের কাপড়ের পর্দাগুলিও এ কাজে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
গত ২১ নভেম্বর গভীর রাতে ঝাড়খণ্ডের পারসনাথ ও নিমিয়াঘাট স্টেশনের মাঝে চলন্ত দুন এক্সপ্রেসে আগুন ধরে যায়। এতে বাতানুকূল বি-ওয়ান কামরার ৭ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। রেল কর্তাদের বক্তব্য, ঠান্ডা হাওয়াতেই কামরার ভিতরে আগুন তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তারা আবার এ কথাও মানছেন, কামরাটি বাতানুকূল হওয়ায় সে দিন জানলার কাচ না ভাঙলে ধোঁয়ায় অনেক যাত্রীই শ্বাসরুদ্ধ হতে পারত। কারণ, আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গেই বাতানুকূল যন্ত্র বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে কাচ ভেঙে দেওয়ায় ওই দুই কামরার যাত্রীরা প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পরে যাত্রীদের অভিযোগ ছিল, সে দিন ওই দুই কামরায় কোনও অ্যাটেন্ড্যান্ট ছিলেন না। ঘটনার পরেও তাঁদের দেখা যায়নি। সে দিন কোচ অ্যাটেন্ড্যান্টের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা-ও এখনও তদন্তারীদের কাছে পরিষ্কার হয়নি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন যে বাতানুকূল কামারগুলি ট্রেনে লাগানো হয়েছিল সেগুলিতে প্রাথমিক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রও ছিল, যা এখন প্রায় সব ট্রেনের বাতানুকূল কামরাতেই দেওয়া থাকে। রেল বোর্ড সূত্রে খবর, বাতানুকূল কামরা ছাড়া, প্রতিটি ট্রেনের চালক ও গার্ডের কাছেও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকে। কোচ অ্যাটেন্ড্যান্ট, গার্ড ও চালক, প্রত্যেককেই অগ্নি নির্বাপনের জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। রেল কর্তারা মনে করছেন, প্রথমেই তৎপর হওয়া গেলে দুর্ঘটনা এত ভয়াবহ না হতেও পারত।
এই ঘটনার পরে রেল বোর্ড এখন বড় বড় ট্রেনগুলির জানলা ও কেবিনের পর্দার জন্য আগুনরোধী কাপড়ের খোঁজ করছেন। রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে রাজধানী ও দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনে ওই কাপড়ের পর্দা চালুর ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। কয়েকটি কামরায় ইতিমধ্যেই ওই ধরনের কাপড়ের পর্দা লাগানো হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, রেল সূত্রে খবর, এই ধরনের ঘটনার পরে চিফ সেফটি কমিশনার রেলের কাছ থেকে ঘটনার কারণ সম্পর্কে একটি লিখিত রিপোর্ট চান। রেলের পরিভাষায় একে ‘টেনিক্যাল নোট’ বলা হয়। বাতানুকূল যন্ত্র থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন ধরেছে বলে মনে হওয়ায় ওই নোট লেখার কথা রেলের বৈদ্যুতিক দফতরেরই। ওই দফতর ওই নোট লিখে ইতিমধ্যেই চিফ সেফটি অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে চিফ সেফটি কমিশনার একটি রিপোর্ট দেবেন রেলের কাছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.